সংগৃহীত ছবি
                                    ভারত মহাসাগরে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ জিম্মি ঘটনার দুই সপ্তাহ পার হয়েছে। গত ১২ মার্চ মঙ্গলবার সোমালী জলদস্যুরা জাহাজটি জিম্মি করার পর এতদিনেও জাহাজ কিংবা নাবিকদের উদ্ধারে কোনো অগ্রগতি হয়নি। এতে উদ্বেগ বেড়েছে নাবিকদের পরিবারগুলোতে।
জানা গেছে, ইইউর নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর কাছাকাছি থাকায় জলদস্যুরা কিছুটা শক্ত অবস্থান নিয়েছে। জাহাজটিতে ভারী অস্ত্র সজ্জিত করেছে জলদস্যুরা।
এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের নাবিক ইঞ্জিন অয়েলার মোহাম্মদ শামসুদ্দিনের পরিবার জানিয়েছে, ইইউর যুদ্ধ জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর কাছাকাছি অবস্থান নেওয়ায় ২৩ বাংলাদেশি নাবিকের ওপর কড়াকড়ি শুরু করেছে সশস্ত্র জলদস্যুরা।
নাবিক শামসুদ্দিনের বরাত দিয়ে তার পরিবারের এক সদস্য জানিয়েছেন, গোপনে ফোন করে শামসুদ্দিন জানিয়েছেন- আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫ জন জলদস্যু জাহাজে সার্বক্ষণিক সশস্ত্র পাহারা দিচ্ছে। নিজেদের শক্তি জানান দিতে ইউরোপীয় যুদ্ধজাহাজের দিকে কয়েকদফা গুলি ছুঁড়েছে দস্যুরা।
নাবিক শামসুদ্দিন আরও জানিয়েছেন, জাহাজে এরইমধ্যে খাবার পানির সংকট তৈরি হয়েছে। পানি ব্যবহার ও খাবার নিয়ে কষ্ট করতে হচ্ছে নাবিকদের। কষ্টে থাকলেও এখন পর্যন্ত সবাই সুস্থ আছেন।
জিম্মি জাহাজে জলদস্যুদের ভারী অস্ত্র বসানোর প্রমাণ মিলেছে সোশ্যাল মিডিয়া এক্সের পোস্টে। গত বুধবার এক্স পোস্টে দস্যুদের ভারী অস্ত্র তাক করে রাখার ছবি প্রকাশ করেছে ভারতীয় বিমান বাহিনী ও ডেইলি সোমালিয়া পত্রিকা।
ডেইলি সোমালিয়ার পোস্টে বলা হয়, ইউরোপীয় যুদ্ধজাহাজের অবস্থান নিয়ে নজর রাখার পাশাপাশি ১৭ নাবিকসহ জলদস্যুদের খপ্পরে পড়া মাল্টার জাহাজ এমভি রুয়েন উদ্ধার করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী। এরপরই এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজে থাকা জলদস্যুরাও সতর্ক হয়ে যায়। জাহাজে ভারী অস্ত্র বসিয়েছে তারা। ছবিতে দেখা যায়, সমুদ্রের দিকে অস্ত্র তাক করে রেখেছে দস্যুরা।
এর আগে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজকে নজরে রাখার কথা জানায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজ- অপারেশন আটলান্টা। জিম্মি জাহাজ থেকে ৪-৫ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছে ইউরোপীয় যুদ্ধজাহাজ। ইউরোপীয় যুদ্ধজাহাজ কোনো অভিযান না চালালেও তাদের নজরদারির চাপে রয়েছে জলদস্যুরা।
১২ মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহকে জিম্মি করে সোমালিয়ার কাছাকাছি নিয়ে যায় জলদস্যুরা। জিম্মি করার ৯ দিনের মাথায় গত ২০ মার্চ, বুধবার জাহাজটির মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের সঙ্গে প্রথম যোগাযোগ করে দস্যুরা।
তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জিম্মি উদ্ধার নিয়ে কোনো রফা-দফা হয়নি। যদিও জাহাজের মালিকপক্ষ বলছে, জিম্মি জাহাজ উদ্ধার ও নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার তৎপরতা চলছে।
            
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: