ফাইল ছবি
                                    ৩৩ দিন পর জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিককে মুক্তিপণের মাধ্যমে ছাড়িয়ে নেয়া হল। সোমালিয়ান সময় গতকাল শনিবার রাত ১২টা ৮ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ৩টা ৮ মিনিট) সোমালিয়ার উপকূলে জিম্মি জাহাজ ও নাবিকদের মুক্ত করা হয়। দস্যুরা নেমে যাওয়ার পর সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হারমিয়া বন্দরের উদ্দেশে যাত্রা করে জাহাজটি। এমভি আবদুল্লাহ সোমালিয়া উপকূল পার হওয়ার সময় দুটি যুদ্ধজাহাজ পাহারায় ছিল।
দস্যুদের মুক্তিপণ দেওয়ার পর জাহাজের নাবিকেরা উল্লসিত হয়ে পড়েন। জিম্মি থেকে মুক্ত নাবিকেরা তখনই তাঁদের পরিবারের সদস্যদের কাছে মোবাইল ফোনে আনন্দের খবরটি জানান। গভীর রাতেই নাবিকদের ঘরে স্বস্তির ঈদ আনন্দ খেলে যায়।
মুক্তিপণের অর্থ পরিশোধের সময় জিম্মি জাহাজটির অদূরে ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ। আবার স্থলভাগে ছিল সোমালিয়ার পান্টল্যান্ড পুলিশের টহল।
এদিকে পরিবারের সদস্যদের কাছে নাবিকদের দেওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, ছোট উড়োজাহাজ থেকে এমভি আবদুল্লাহর পাশে ডলারভর্তি ব্যাগ ফেলা হয়। জাহাজের পাশে আগে থেকেই স্পিডবোটে করে অপেক্ষায় ছিল দস্যুদের একটি দল। ডলারভর্তি ব্যাগ পানি থেকে সংগ্রহ করার প্রায় আট ঘণ্টা পর গভীর রাতে দস্যুরা জাহাজটিকে মুক্তি দেয়।
ডলারভর্তি ব্যাগ পানিতে দস্যুদের হাতে ফেলার আগে নাবিকদের জাহাজের ডেকে নিয়ে আসা হয়। তাঁদের এক সারিতে দাঁড় করায় দস্যুরা। এ সময় পেছন থেকে নাবিকদের দিকে অস্ত্র তাক করে ছিল দস্যুরা। পরে উড়োজাহাজ থেকে নাবিকদের প্রতি ইশারায় হাত তোলার ইঙ্গিত দেওয়া হয়। এরপর সব নাবিক হাত তোলেন। ২৩ নাবিকের সবাই জীবিত ও ডেকে উপস্থিতি নিশ্চতি হওয়ার পরই উড়োজাহাজ থেকে ডলারের ব্যাগ ফেলা হয়। তবে ব্যাগে কত ডলার ছিল, তা কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি। মালিকপক্ষ থেকেও বিষয়টি জানানো হয়নি।
এমভি আবদুল্লাহর মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান জাহাজ ও নাবিকদের মুক্ত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। যুদ্ধজাহাজের পাহারায় জাহাজটি সোমালিয়া উপকূল ত্যাগ করার কথাও জানান তিনি।
কেএসআরএম গ্রুপের এই কর্মকর্তা আজ রোববার ভোর ৪টা ২৫ মিনিটে এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘জলদস্যুতার শিকার হওয়া এমভি আবদুল্লাহ মুক্তি পেয়েছে! আলহামদুলিল্লাহ। সকল ক্রু নিরাপদ আছেন এবং শীঘ্রই বাড়ি ফিরে আসবেন।’
তথ্যমতে, ১২ মার্চ মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হারমিয়া বন্দরে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে এমভি আবদুল্লাহ। জাহাজটি জিম্মি করার পর সোমালিয়ার গদভজিরান জেলার জেফল উপকূলের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। ৯ দিনের মাথায় দস্যুরা প্রথম মুক্তিপণের দাবি জানায়। প্রায় দুই সপ্তাহ দর-কষাকষির পর মুক্তিপণের অঙ্ক চূড়ান্ত হয়। সেই থেকে মুক্তির প্রহর গুনতে থাকেন নাবিকেরা।
এ বিষয়ে একটি জাহাজের ক্যাপ্টেন আতিক ইউ খান বলেন, আগামী ২১ এপ্রিল এমভি আবদুল্লাহ দুবাইয়ে পৌঁছাবে। সেখান থেকে ফিরবে দেশে।
            
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: