সন্ত্রাস বিরোধী আইনে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১০ মে ২০২৫ ২৩:২৫

গ্রাফিক্স গ্রাফিক্স

দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

আজ শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

এর আগে আজ রাত ৮টায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক শুরু হয়।

বৈঠক শেষে এক বিবৃতিতে উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়, আজ উপদেষ্টা পরিষদের এক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল আইনের সংশোধনী অনুমোদিত হয়েছে। সংশোধনী অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল কোনো রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবে।

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাস বিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আরও বলা হয়, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিপত্র পরবর্তী কর্মদিবসে জারি করা হবে। এর পাশাপাশি আজকের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জুলাই ঘোষণাপত্র আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত করে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এদিকে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি লিখেছেন, 'আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত হলো। আইনি প্রক্রিয়ায় দল হিসেবে নিষিদ্ধ করার প্রভিশন যুক্ত হলো। আগামী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করা হবে।'

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা গত তিন দিন ধরে টানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন। গতকাল শুক্রবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার কাছে গণজমায়েতের পর বিকাল ৫টার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। তাদের কর্মসূচি আজও চলছে। এ কর্মসূচির মধ্যে উপদেষ্টার পরিষদের জরুরি এই বৈঠক আহ্বান করা হলো।

এই পরিস্থিতিতে গতকাল শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছে সরকার।

অন্তর্বর্তী সরকার জানায়, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদনও তারা বিবেচনায় রাখছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

সরকার আরও জানিয়েছে, জনদাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে ছাত্রলীগকে ইতোমধ্যে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া, মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: