সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে জামায়াতের সমাবেশ

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও লেভের প্লেয়িং ফিল্ড হলেই নির্বাচনে যাবে জামায়াত: তাহের

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৩ আগস্ট ২০২৫ ২২:২২

ছবি : সংগৃহীত ছবি : সংগৃহীত

সরকার এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, দেশকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেবেন না, আরেকটি ওয়ান-ইলেভেনের প্রেক্ষাপট তৈরি করবেন না। আসুন সংলাপ করি। তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনে যেতে চাই। তার আগে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার সব বিষয় স্পষ্ট করতে হবে। আমরা ইলকেশন চাই, সিলেকশন নয়।

বুধবার ঢাকা মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) জামায়াতের উদ্যোগে রাজধানীর বিজয়নগর রোডে (পানির ট্যাংকি সংলগ্ন সড়ক) এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা করেন। জুলাই জাতীয় ঘোষণাপত্র ও ‘জুলাই জাতীয় সনদ-এর আইনগত স্বীকৃতি এবং এ সনদের ভিত্তিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে এই সমাবেশের ডাক দেয়া হয়।

জামায়াতের নায়েবে আমীর বলেন, অধিকাংশ দলই জুলাই ঘোষণাপত্রের ব্যাপারে মত, ভিন্নমত, ও নোট দিয়েছেন। সব কিছুর বিষয়ে ঐকমত্য হওয়ার পরও একটি দল বলছে, এর আইনি ভিত্তি নেই। তাহলে কি এই ঘোষণাপত্রের আইনি ভিত্তি আছে? সরকার তো মুখে স্বীকার করছে, কিন্তু সে অনুযায়ী যদি বাস্তবায়ন না করে তাহলে ঈমান থাকে?

আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, জুলাই ঘোষণা ও জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি প্রদান করতে হবে। তারপর এর আলোকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হবে।

জামায়াত ইলেকশন চায়, সিলেকশন চায় না, মেনেও নিবে না উল্লেখ করে আব্দুল্লাহ তাহের বলেন, সরকারের নির্বাচনের রোডম্যাপকে শুধুমাত্র একটি দল স্বাগত জানিয়েছে। গণতন্ত্রকামী দেশের অন্য রাজনৈতিক দলগুলো স্বাগত জানায়নি, জানাতে পারেনি। কারণ নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রের সংস্কার, সকল গণহত্যার বিচার নিশ্চিত এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি।

স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও এদেশের জনগণ একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখেনি। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী জাতি নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের আশা করেছে। এজন্য রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার ও গণহত্যার বিচার চেয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়ে ঘোষণাও দিয়েছিল রাষ্ট্রের সংস্কার করবে। কিন্তু এই সরকারের উচিত ছিল আগে নিজেরা যেই চেয়ারে বসেছে সেই চেয়ারগুলো ধুয়েমুছে পরিষ্কার ও পবিত্র করা। কারণ তারা সংস্কারহীন অপবিত্র, অপরিষ্কার চেয়ারে বসে নিজেদের দেয়া প্রতিশ্রুতি ভুলে গিয়েছে।

তিনি বলেন, মাসের পর মাস সংস্কারের নামে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে ডেকে নিয়ে পরিশেষে সংস্কারের আইনি ভিত্তি দিতে পারবে না বলে সরকার জাতির সঙ্গে তামাশা করেছে। জুলাই ঘোষণাপত্রের সাংবিধানিক উপায় আলী রীয়াজ দেখাতে না পারলেও আমরা দেখাতে পারবো মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমাদের সেই দায়িত্ব দেন, আমাদের সঙ্গে বসেন। মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা না করতে তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

দেশের ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চাইলেও, একটি দল জনগণের মতের বিপক্ষে উল্লেখ করে ডা. তাহের বলেন, অধিকাংশ জনগণের মতামত মেনে নেয়ার নামই ডেমোক্রেসি। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কর্তৃক পরিচালিত জরিপে উঠে এসেছে দেশের ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায়। যেই রাজনৈতিক দলের নেতারা পিআর বুঝে দাবি করে তিনি ওই নেতাদের রিকশাচালক, ভ্যানচালক, চা-পান বিক্রেতার কাছ থেকে পিআর বুঝে নিতে অনুরোধ করেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, মহানগর উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন প্রমুখ। সমাবেশ শেষে বিজয়নগর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল কাকরাইল নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: