
বাংলা ভাষার যে কজন বিখ্যাত মানুষের প্রতি বাঙালি জাতি চিরদিন ঋণী থাকবে তাঁদের মধ্যে অন্যতম বহুভাষাবিদ ও দার্শনিক জ্ঞানতাপস ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। তিনি ১০ জুলাই ১৮৮৫ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অবিভক্ত চব্বিশ পরগনা জেলার পেয়ারা গ্রামে আজকের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন।
ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ভারতীয় উপমহাদেশের বাঙালি বহুভাষাবিদ ও দার্শনিক ছিলেন। মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ১৯০৪ সালে হাওড়া জেলা স্কুল থেকে এন্ট্রান্স এবং ১৯০৬ সালে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে এফ.এ (বর্তমান এইচএসসি’র সমমান) পাশ করেন।
পরবর্তী সময়ে তিনি ১৯১০ সালে সিটি কলেজ, কলকাতা থেকে সংস্কৃতে সম্মান-সহ বি.এ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বে এম.এ (১৯১২) ডিগ্রি অর্জন করেন।
এ ছাড়াও ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ প্যারিসের সর্বন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট উপাধি (১৯২৮) লাভ করেন।
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ প্রায় ২৪টি ভাষা আয়ত্ত করেছিলেন। এর মধ্যে ১৮টি ভাষার ওপর তাঁর উল্লেখযোগ্য পাণ্ডিত্য ছিল। উল্লেখযোগ্য ভাষাসমূহ হলো- বাংলা, উর্দু, ফারসি, আরবি, ইংরেজি, অসমীয়া, ওড়িয়া, মৈথিলী, হিন্দি, পাঞ্জাবি, গুজরাতি, মারাঠি, কাশ্মীরি, নেপালি, সিংহলি, তিব্বতি, সিন্ধি, সংস্কৃত, পালি ইত্যাদি।
শহীদুল্লাহ সবসময়ই সাহিত্য কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এম.এ পাশ করার পরই তিনি বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সমিতির সম্পাদক হন। ১৯৪৮ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান সাহিত্য সম্মেলনের সভাপতি ছিলেন।
তাঁর লেখা বই এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য রয়েছে ‘বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত’, ‘দীওয়ানে হাফিজ’, ‘রুবাইয়াত-ই-ওমর খৈয়াম’, ‘নবী করিম মুহাম্মাদ’, ‘ইসলাম প্রসঙ্গ’, ‘বাংলা সাহিত্যের কথা (২ খণ্ড)’, ‘বাংলা ভাষার ব্যাকরণ’ ও ‘টেইল ফ্রম দি কুরআন’ প্রভৃতি। [
ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম এমেরিটাস অধ্যাপক পদ লাভ করেন। এছাড়াও তিনি ১৯৮০ সালে মরণোত্তর বাংলাদেশের স্বাধীনতা পদক অর্জন করেন। বাঙালি এই দার্শনিক ১৩ জুলাই ১৯৬৯ সালে প্রয়াত হন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: