সংগৃহীত ছবি
                                    গত বছরের ৭ই অক্টোবর ইসরাইলে ঢুকে সফলভাবে এক বিষ্ময়কর অভিযান পরিচালনা করে ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। আর এই অভিযান মুসলিম বিশ্বকে নতুনভাবে জাগ্রত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মুহাম্মাদ। কুয়ালালামপুর ফোরাম ফর থট এন্ড সিভিলাইজেশন সংগঠনের ৭ম সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন তিনি।
বক্তব্যের শুরুতেই আল আকসা ফ্লডের বার্ষিকী স্মরণ করা কেন জরুরি তা তুলে ধরেন এই তুখোড় রাজনীতিবিদ।
মাহাথির বলেন, গত বছরের ঠিক এই দিনে আল আকসা ফ্লডের মাধ্যমে বিশ্বকে একটি বার্তা দিতে চেয়েছিলেন ফিলিস্তিনিরা। আর তা হল, গাজ্জার উপর ইসরাইলের অবৈধ নীতি, জোরপূর্বক অবরোধ ও দখলদারিত্বকে ছুঁড়ে ফেলে নিজেদের ভূমি স্বাধীন করতে বদ্ধপরিকর তারা। তাই এই সম্মেলনে আল আকসা ফ্লডের এক বছর পূর্তির আলোচনার বিষয়টি নির্ধারণ করা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ফিলিস্তিনিদের বীরত্ব গাথা অভিযানের বর্ণনা দিয়ে মাহাথির মুহাম্মাদ বলেন, গত বছরের এই দিনে গাজ্জা সংলগ্ন ইসরাইলের সামরিক ঘাটি ও অবৈধ বসতিগুলোতে সফল অভিযান পরিচালনা করে ফিলিস্তিনি উপদল হামাস। শুধু তাই নয়, মসজিদ আল আকসাকে অবরুদ্ধ করে রাখা ও প্রতিনিয়ত ফিলিস্তিনের উপর ইসরাইলের বর্বরতার বিরুদ্ধে তারা হত্যা ও ইসরাইলিদের বন্দি পর্যন্ত করেছে।
তিনি আরো বলেন, এতদিন ধরে ইসরাইল তার দখলদারিত্ব ও অপরাধকে বিশ্বের কাছে নিজেদের মতো করে বর্ণনা করতো। তবে ফিলিস্তিনের পক্ষে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের ছাত্রদের বিক্ষোভ এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকার করা মামলায় এসব বর্ণনার পতন হয়েছে।
সম্মেলনে মুসলিম বিশ্বের সমস্যা গুলো তুলে ধরে মাহাথির মুহাম্মাদ বলেন, “.দারিদ্রদের ভুলে গেলে চলবে না। অভাবগ্রস্থদের অবশ্যই যাকাত প্রদান করতে হবে। আমরা যদি তাদের অভাব দূর করতে না পারি তাহলে তারা অন্য দেশে চলে যেতে বাধ্য হবে। যা মুসলিম দেশগুলোর জন্য লজ্জাজনক ব্যর্থতা। ইসলাম আমাদেরকে যে পরিবেশ দিতে বলেছে তা অবশ্যই প্রদান করতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “অতীতে জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় অগ্রভাগে ছিলেন মুসলিমরা। অথচ বর্তমানে আমরা এসব দিক থেকে পিছিয়ে পড়েছি। জ্ঞান বিজ্ঞানের বিষয়টিকে আমরা অনেকটাই অমুসলিমদের হাতে ছেড়ে দিয়েছি। অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে, নিজেদের আত্মরক্ষার প্রয়োজনীয় অস্ত্রের জন্যও অন্যদের উপর নির্ভর করে থাকতে হচ্ছে আমাদের। তাই আমাদের ধর্মীয় জ্ঞানের পাশাপাশি দুনিয়ার জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিও মনোযোগী হতে হবে।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “ইসলামের শত্রুরা আমাদেরকে শুধুমাত্র ‘মুসলিম ও সন্ত্রাসী’ হিসেবে চিহ্নিত করে। তাই একত্রিত না হলে নিঃসন্দেহে আমাদের ধ্বংস করে দেয়া হবে।”
উল্লেখ্য, কুয়ালালামপুর ফোরাম ফর থট এন্ড সিভিলাইজেশন সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট মাহাথির মোহাম্মদ নিজেই। এই সংগঠনটি মূল উদ্দেশ্য মুসলিম উম্মাহর কল্যাণকর বিষয়ে আগ্রহী চিন্তাবিদ ও শিক্ষাবিদদের একত্রিত করা।
সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর
            
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: