এই মুহূর্তে মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের বিকল্প নেই: ওআইসি সম্মেলনে এরদোগান

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২২ জুন ২০২৫ ২১:৩৩

ছবি : ইন্টারনেট থেকে ছবি : ইন্টারনেট থেকে

ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা যখন তুঙ্গে, তখন শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে গর্জে উঠেছেন মুসলিম বিশ্বের প্রতিনিধিরা। শনিবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)-র সম্মেলনে মুখোমুখি হন ৪৩টি মুসলিম দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তাদের মাঝে সবচেয়ে উচ্চকণ্ঠে বক্তব্য রাখেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান। তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি ‘শান্তির পথে সবচেয়ে বড় বাধা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

গতকাল ইস্তাম্বুলে শুরু হওয়া দু’দিনব্যাপী এ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান। অংশগ্রহণ করেন ৪৩ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ৫ জন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বিভিন্ন দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রায় হাজার খানেক প্রতিনিধি সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলনে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি ওআইসির সব সদস্যকে ইসরায়েলের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিতে হবে। সত্যিকার অর্থেই সবাইকে ইরানের সাথে সংহতি প্রকাশ করা উচিত’। তিনি আরো বলেন, ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধে বিশ্ব মুসলিম জাতিকে একসাথে সুরে কথা বলতে হবে। ইরানের বিরুদ্ধে যেভাবে সন্ত্রাসী আচরণ করা হচ্ছে, তা কেবল মধ্যপ্রাচ্যের নয়, গোটা মুসলিম বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।

ওআইসি সম্মেলনের অন্যতম আকর্ষণ ছিল তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানের কড়া বক্তব্য। তিনি বলেন, ‘একের পর এক দেশে হামলা চালিয়ে নেতানিয়াহু প্রমাণ করেছেন, আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় তিনিই সবচেয়ে বড় বাধা। আমি ইসরাইলের এসব হামলার জন্য তাদের তীব্রভাবে অভিশাপ দিচ্ছি। নেতানিয়াহু সরকার কূটনৈতিকভাবে কোনো সমস্যার সমাধান চান না। এরই মধ্যে সেটি স্পষ্ট হয়েছে’।

সম্মেলনে অংশ নিয়ে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি স্পষ্ট করে বলেন, ইসরায়েলি আগ্রাসন চলাকালীন সময়ে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো আলোচনায় বসবে না। তিনি বলেন, ‘হামলা বন্ধ না হলে কোনো কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশ নেবো না আমরা। আমাদের জনগণের ওপর বোমা হামলা চলাকালীন আমরা তাদের সাথে আলোচনায় বসতে পারি না’।

তুরস্কের আহ্বান এবং ইরানের হুশিয়ারির পর মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তেজনা নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। ওআইসি সম্মেলনটি এ সংকট নিরসনে মুসলিম বিশ্বের একটি কৌশলগত অবস্থান নিতে পারে কি না, তা সময়ই বলে দেবে। তবে নেতানিয়াহুর ভূমিকা ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে কূটনৈতিক মেরুকরণ এখন আরো স্পষ্ট।

এদিকে জাতিসংঘে ইসরায়েলকে কার্যত তুলোধুনো করেছে পাকিস্তান, চীন, রাশিয়া ও আলজেরিয়া। সংস্থাটির নিরাপত্তা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে ইরানের ওপর সামরিক আগ্রাসন নিয়ে ইসরায়েলের সমালোচনা করে দেশগুলো। এ চারটি দেশ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, ইরানের ওপর এ হামলা পুরো অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। গতকাল এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে ইরানের ওপর ইসরায়েলের সামরিক হামলার কঠোর সমালোচনা করেছে পাকিস্তান, চীন, রাশিয়া ও আলজেরিয়া। তারা সতর্ক করে বলেছে, এ হামলা পুরো অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে এবং পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার যে নজির তৈরি করা হয়েছে, তা ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: