২০২৪-২৫ সালে ৫৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে আরব আমিরাতের সোনা রপ্তানি

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৪ জুলাই ২০২৫ ০১:৫২

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

২০২৪-২৫ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত ৫৩.৪১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সোনা রপ্তানি করেছে, যা বিশ্বের শীর্ষ স্বর্ণ রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে তার অবস্থানকে আরও দৃঢ় করেছে। বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য তথ্য বিশ্লেষণকারী প্ল্যাটফর্ম ট্রেডআইমেক্স এখবর জানিয়েছে।

এশিয়া, আফ্রিকা এবং ইউরোপের মধ্যে কৌশলগত অবস্থানের কারণে সংযুক্ত আরব আমিরাত সোনার বাণিজ্যের জন্য একটি বিশ্বব্যাপী কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। কেবল পর্যটক এবং দুবাইয়ের বাজারের ক্রেতাদের জন্যই নয়, বরং প্রতি বছর কোটি কোটি ডলার মূল্যের মূল্যবান ধাতুটি কিনতে আন্তর্জাতিক ক্রেতারাও ভিড় জমান।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের সোনা রপ্তানি বিভিন্নভাবে হয়। যার মধ্যে সোনার বার সবচেয়ে বেশি। ২০২৩ সালে, সোনার বার রপ্তানির মূল্য ছিল ৫.৮ বিলিয়ন ডলার, তারপরে রয়েছে ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের সোনার মুদ্রা, ৩.৮ বিলিয়ন ডলারের গয়না এবং ২.৭১ বিলিয়ন ডলারের সোনার গুঁড়ো।

অন্যান্য রপ্তানির মধ্যে রয়েছে সোনার নাগেট ( ১.৮৬ বিলিয়ন ডলার ), সোনার স্ক্র্যাপ ( ১.৫৭ বিলিয়ন ডলার ), সোনার তৈরি জিনিসপত্র (১ বিলিয়ন ডলার ), সোনার প্রলেপ দেয়া পণ্য ( ৯০০ মিলিয়ন ডলার ), সোনার পাতা ( ৮০০ মিলিয়ন ডলার ) এবং সোনার ব্রোচ ( ৭০০ মিলিয়ন ডলার ) - এই সমস্ত পরিসংখ্যান সংযুক্ত আরব আমিরাতের রপ্তানি তথ্য অনুসারে ট্রেডআইমেক্স প্রকাশ করেছে ।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের এই সোনা কে কিনছে?

ট্রেডআইমেক্স কর্তৃক পর্যালোচনা করা দেশীয় -স্তরের আমদানি তথ্য অনুসারে, দশটি প্রধান বাণিজ্য অংশীদারের মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সোনা রপ্তানি সবচেয়ে বেশি কোথায় হয়েছে দেখে নেয়া যাক -

সুইজারল্যান্ড : ২০২৩ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৪.৭৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সোনা আমদানি করে সুইজারল্যান্ড তালিকার শীর্ষে ছিল। আমদানি করা পণ্যগুলোর মধ্যে ছিল সোনার বার, গহনার সোনা, সোনার ফ্লেক্স, ইন্ডাস্ট্রিয়াল -গ্রেড সোনা এবং সোনার গুঁড়ো।

যুক্তরাজ্য: এরপর রয়েছে যুক্তরাজ্য, যারা ৩.৬৫ বিলিয়ন ডলারের সোনা কিনেছিল। মূলত সোনার নাগেট, সোনার বাট , মুদ্রা, ব্রোচ এবং চুড়ি।

ভারত : দীর্ঘদিন ধরে সোনার বাণিজ্যে সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক অংশীদার ভারত, ২.৮৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সোনা আমদানি করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। যার মধ্যে রয়েছে সোনার প্রলেপযুক্ত জিনিস ও বাসনপত্র। এছাড়া রয়েছে সোনা-রূপা এবং সোনা- প্ল্যাটিনামের মতো সংকর ধাতু।

হংকং : সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ২.৪৫ বিলিয়ন ডলারের সোনা আমদানি করেছে হংকং। বিশেষ করে সার্টিফাইড গয়না, সোনার প্রলেপযুক্ত ইলেকট্রনিক্স, অলংকরণের ফ্রেম এবং মূর্তি।

তুরস্ক : ১.৮৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সোনা কিনেছে তুরস্ক। হলুদ, সাদা, গোলাপী এবং কালো রংয়ের মতো বিভিন্ন শেডের সোনার পাশাপাশি স্বর্ণ মুদ্রার চাহিদাও ছিল ।

সোনা আমদানি করা শীর্ষ দশের মধ্যে ছিল:

সিঙ্গাপুর (১.৮৪ বিলিয়ন ডলার ) : মূলত খোদাই করা এবং ফিলিগ্রি গহনা। বিভিন্ন রকমের সোনার সংকর ধাতু।

কুয়েত (১.৫ বিলিয়ন ডলার : সোনার নেকলেস, ব্রেসলেট, আংটি এবং সংকর ধাতুর একটি শক্তিশালী বাজার রয়েছে কুয়েতে ।

বাহরাইন (১ বিলিয়ন ডলার ): সোনার টুকরো, নাগেট, ঘড়ি এবং মূর্তি আমদানি করেছে ।

কাতার ( ৯০০ মিলিয়ন ডলার ) : অপরিশোধিত, আধা-পরিশোধিত এবং মুক্তা-খোদাই করা সোনা আমদানি করা হয়েছে ।

চীন ( ৮০০ মিলিয়ন ডলার ): সোনার ভাস্কর্য, ব্র্যান্ডেড বার, পুনর্ব্যবহৃত পণ্য এবং মুদ্রার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে।

স্বর্ণ কাউন্সিল বিশ্বব্যাপী সোনা কেনাবেচার ক্ষেত্রে সংযুক্ত আরব আমিরাতের অব্যাহত আধিপত্যের কথা তুলে ধরেছে। দেশের মুক্ত-বাণিজ্য নীতি, উন্নত সরবরাহ অবকাঠামো এবং সমৃদ্ধ খুচরা ও পাইকারি বাজারের কারণে আমিরাত একটি নির্ভরযোগ্য সরবরাহকারী হয়ে উঠেছে।

বিশ্বব্যাপী চাহিদার পরিবর্তন এবং দাম ওঠানামার সাথে সাথে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের সোনার প্রবাহ কোন দিকে যাচ্ছে তা কেবল বাণিজ্য গতিশীলতাই নয় বরং ভূ-রাজনৈতিক এবং বিনিয়োগের দিকটিকেও ফোকাস করে। এটি মুদ্রাস্ফীতি থেকে শুরু করে ভোক্তাদের গয়নার পছন্দ-সবকিছুকে প্রভাবিত করে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: