05/02/2025 পল কাপুর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক শীর্ষ পররাষ্ট্র কর্মকর্তা মনোনীত
মুনা নিউজ ডেস্ক
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:০৭
ভারত-পাকিস্তান নিরাপত্তা এবং পারমাণবিক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ এস পল কাপুরকে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার সহকারী পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে নিয়োগ অনেকটাই চূড়ান্ত , যা আমেরিকার কূটনৈতিক শাখায় এই অঞ্চলের জন্য সর্বোচ্চ পদ। হিন্দুস্থান টাইমস সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
ডনাল্ড লুর স্থলাভিষিক্ত হবেন পল কাপুর। সিনেট কর্তৃক নিশ্চিত হওয়ার পর প্রশাসনিক পরিবর্তনের সময় পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল লুকে। এরিক মেয়ার, যিনি অসলোতে মার্কিন চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স হিসেবে অধিষ্ঠিত, তিনি আপাতত দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে সিনিয়র ব্যুরো কর্মকর্তার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। নেভাল-পোস্ট গ্র্যাজুয়েট স্কুলের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক বিভাগের অধ্যাপক এবং স্ট্যানফোর্ডের হুভার ইনস্টিটিউশনের ফেলো কাপুর ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট পদের প্রথম মেয়াদে স্টেট ডিপার্টমেন্টের নীতি পরিকল্পনা দলে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সেই সময়ে তিনি দক্ষিণ এশিয়া নিয়ে কাজ করেছিলেন।
কাপুর ক্ল্যারমন্ট ম্যাককেনা কলেজেও শিক্ষকতা করেছেন এবং স্ট্যানফোর্ডে একজন ভিজিটিং প্রফেসর। তার বইগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘জিহাদ অ্যাজ গ্র্যান্ড স্ট্র্যাটেজি: ইসলামিস্ট মিলিট্যান্সি’,‘ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড দ্য পাকিস্তানি স্টেট’ ও ‘ডেঞ্জারাস ডিটারেন্ট: নিউক্লিয়ার উইপন্স প্রলিফারেশন অ্যান্ড কনফ্লিক্ট ইন সাউথ এশিয়া’। তিনি ‘ইন্ডিয়া, পাকিস্তান অ্যান্ড দ্য বোম্ব: ডিবেটিং নিউক্লিয়ার স্ট্যাবিলিটি ইন সাউথ এশিয়া’ বইয়ের সহ-লেখক এবং দ্য ‘চ্যালেঞ্জেস অব নিউক্লিয়ার সিকিউরিটি: ইউএস অ্যান্ড ইন্ডিয়ান পারসপেক্টিভস’ বইয়ের সহ-সম্পাদক।
কাপুর শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি প্রতিরক্ষা বিভাগের জন্য ‘ইউএস-ইন্ডিয়া ট্র্যাক ১.৫ ডায়ালগ’ ইভেন্টটিও পরিচালনা করেন। ২০২৩ সালে অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের হর্ষ পান্তের সঙ্গে যৌথভাবে লেখা একটি প্রবন্ধে কাপুর উল্লেখ করেছেন যে, মার্কিন-ভারত কৌশলগত অংশীদারিত্ব অবশ্যম্ভাবী পরিণতি ছিল।
তিনি আরো উল্লেখ করেছেন, একটি মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিশ্চিত করা, ক্রমবর্ধমান চীনা শক্তির সাথে ভারসাম্য বজায় রাখা এবং বাণিজ্য ও অন্যান্য অর্থনৈতিক সহযোগিতার মাধ্যমে সমৃদ্ধি বৃদ্ধি করা দু দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। কাপুর ও পান্ত সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, সম্পর্কের গভীরতার থেকেও আরেকটি জিনিস গুরুত্বপূর্ণ। সহযোগিতামূলক নীতিগুলোকে কার্যকরভাবে প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের জন্য সতর্ক ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। অপর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনার ফলে এক দেশ অন্য দেশের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে না, যার ফলে মতবিরোধ এবং তিক্ততা দেখা দেয়। যেমন ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ভারত-মার্কিন মতবিরোধ এবং অর্থনৈতিক প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়া, যেমন মার্কিন-ভারত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির অভাব।
অন্য একটি প্রবন্ধে শিক্ষাবিদ সুমিত গাঙ্গুলির সঙ্গে কাপুর উল্লেখ করেছেন যে, ভারত-মার্কিন নিরাপত্তা সম্পর্ক মূলত চীনাকে প্রতিরোধ করার জন্য। যার লক্ষ্য ভারতের সক্ষমতা বাড়াতে উচ্চমানের সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে ভারতকে সহায়তা করা। কারণ আমেরিকা মনে করে একটি শক্তিশালী এবং সত্যিকার অর্থে স্বাধীন ভারত অবশ্যই ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারের চীনা প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করবে।"
কাপুর ও গাঙ্গুলি ভারত-মার্কিন সম্পর্ক আরও গভীর করার জন্য পাঁচটি উপায় প্রস্তাব করেছেন। সেগুলো হলো, সহ-উৎপাদন উদ্যোগের মাধ্যমে ভারতীয় সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা, ভারতে সরবরাহ শৃঙ্খলে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে নতুন ক্ষেত্রগুলোতে যৌথ কৌশলগত প্রচেষ্টা সম্প্রসারণ করা,নৈতিক সমন্বয়ের পরিবর্তে কৌশলগত স্বার্থের উপর সম্পর্ক স্থাপন করা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক আরও গভীর করা এড়িয়ে চলা কারণ এটি ভারতের সাথে মার্কিন সম্পর্কের ক্ষতি করবে এবং ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সক্রিয়ভাবে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ককে পরিচালনা করা।
দক্ষিণ এশীয় অঞ্চল সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত একজন বিশেষজ্ঞ পররাষ্ট্র দপ্তরে দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষ পদে বসার পর ট্রাম্প প্রশাসনে ভারতের আরও একজন বন্ধুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী থাকবেন। যার হাতে গুরুত্বপূর্ণ কার্যকরী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা থাকবে।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.