05/02/2025 রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা শিথিলে পদক্ষেপ নিচ্ছে হোয়াইট হাউস
মুনা নিউজ ডেস্ক
৪ মার্চ ২০২৫ ১৫:৩২
রাশিয়ার উপর সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞাগুলো শিথিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, রাশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে উন্নত করে তুলতে এবং ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধ করতে উঠেপড়ে লেগেছে আমেরিকা। সেই লক্ষ্যেই ঠিক কোন কোন ক্ষেত্রে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে আমেরিকা তার খসড়া তালিকা তৈরি হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বিদেশ দপ্তর ও রাজস্ব দপ্তরকে এই খসড়া তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছে হোয়াইট হাউস। জানা যাচ্ছে, এই তালিকা থেকে উঠে আসা বিষয়গুলো নিয়ে আগামীদিনে মস্কোর সঙ্গে আলোচনা করবে হোয়াইট হাউস।
সূত্র অনুসারে, নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কিত দপ্তরগুলো কিছু রাশিয়ান অলিগার্কসহ নির্বাচিত সংস্থা এবং ব্যক্তিদের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য একটি প্রস্তাব তৈরি করছে। নিষেধাজ্ঞা নীতির সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা সাধারণত এমন সম্ভাব্য বিকল্প নথি প্রস্তুত করে থাকেন। তবে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে হোয়াইট হাউসের তরফে নির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ ট্রাম্প ও তার উপদেষ্টাদের রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিলের ইচ্ছাকে তুলে ধরে, যা মস্কোর সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তির অংশ হতে পারে।
ওয়াশিংটন কিসের বিনিময়ে রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি দিতে পারে, তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়। তবে রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল উৎপাদক। যুক্তরাষ্ট্র যদি রাশিয়ার জ্বালানি খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে, তাহলে ইরান থেকে তেল রপ্তানির ওপর ট্রাম্প কঠোর পদক্ষেপ নিলে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম বাড়ার সম্ভাবনা হ্রাস পেতে পারে। যদিও হোয়াইট হাউস, স্টেট ডিপার্টমেন্ট, ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট এবং ওয়াশিংটনে রাশিয়ান দূতাবাস তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চায়নি।
জো বাইডেনের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ক্রেমলিনের সম্পর্ক প্রায় তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। ডেমোক্র্যাট বাইডেন ইউক্রেনকে সহায়তা এবং অস্ত্র দিয়ে সমর্থন করেছিলেন এবং ২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণের জন্য রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন।
কিন্তু ট্রাম্প, যিনি যুদ্ধের দ্রুত সমাপ্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সেই লক্ষ্যে মস্কোর সাথে আলোচনা শুরু করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান নীতি পরিবর্তন করেছেন। ১২ ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে একটি ফোন কলের মাধ্যমে সেই আলোচনা শুরু হয়েছে। সৌদি আরব এবং তুরস্কে রুশ কর্মকর্তাদের সাথে প্রশাসনের বৈঠকেও বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। পুতিন ইউক্রেনের যুদ্ধের অবসান ঘটাতে না চাইলে জানুয়ারিতে ট্রাম্প রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন।
তবে সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার সম্ভাবনার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন। ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট ২০ ফেব্রুয়ারি ব্লুমবার্গ টেলিভিশনের সাথে একটি সাক্ষাত্কারের সময় বলেছিলেন যে রাশিয়া অর্থনৈতিক ত্রাণ পেতে পারে, তবে আগামী সপ্তাহগুলোতে আলোচনা কোন দিকে যায় তার উপর বিষয়টি নির্ভর করবে।ট্রাম্প ২৬ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে রুশ নিষেধাজ্ঞাগুলো শিথিল করা যেতে পারে ‘যে কোনও সময়ে’।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, ট্রাম্প গত সপ্তাহে ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে জাতীয় জরুরি অবস্থা বাড়ানোর আগেই পররাষ্ট্র ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা শিথিলের পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন।
জাতীয় জরুরি অবস্থার আওতায় রাশিয়ার যুদ্ধসংশ্লিষ্ট কিছু ব্যক্তি ও সম্পদের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে। ২০১৪ সালের মার্চে রাশিয়া ক্রিমিয়া দখল করলে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসন এসব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। ট্রাম্প প্রশাসন প্রথমে কোন নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে পারে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। ট্রাম্প নির্বাহী আদেশ জারি করে কিছু নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেন।
তবে নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য তাকে কংগ্রেসের অনুমতি নিতে হবে বলে জানিয়েছেন মরিসন ফোয়ারস্টার আইন ফার্মের অংশীদার এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা দপ্তরের সাবেক প্রধান জন স্মিথ।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.