05/02/2025 আরোপিত শুল্ক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদিন আয় ২ বিলিয়ন ডলার
মুনা নিউজ ডেস্ক
৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:৩৭
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, শুল্ক আদায়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিদিন গড়ে ২ বিলিয়ন বা ২০০ কোটি ডলার আয় করছে। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) হোয়াইট হাউজে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই দাবি করেন তিনি। তবে এ সংক্রান্ত কোনো বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেননি ট্রাম্প।
জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের ওপর নানাবিধ শুল্ক আরোপ করেছেন, বিশেষত চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), ভারত ও অন্যান্য বাণিজ্য অংশীদারের বিরুদ্ধে। তার মতে, এই শুল্ক নীতি মার্কিন অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছে ও দেশের জন্য অতিরিক্ত রাজস্ব সৃষ্টি করছে। তবে, অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা তার এই দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
ফেডারেল ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের (অর্থ মন্ত্রণালয়) দৈনিক হিসাব অনুযায়ী, কাস্টমস অ্যান্ড সার্টেইন এক্সাইজ ট্যাক্স (শুল্ক ও বিশেষ কর) বিভাগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে নিট আয় ছিল প্রায় ৭.২৫ বিলিয়ন বা ৭২৫ কোটি ডলার, যা দৈনিক গড়ে প্রায় ২৫৯ মিলিয়ন বা ২৫ দশমিক ৯০ কোটি ডলারের সমান। মার্চ মাসে এই হার দৈনিক গড়ে প্রায় ২০০ মিলিয়ন বা ২০ কোটি ডলার। অর্থাৎ, ট্রাম্পের দাবিকৃত ২০০ কোটি ডলারের সঙ্গে ট্রেজারির তথ্যের বিশাল ব্যবধান রয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ট্রাম্পের এই দাবি অতিরঞ্জিত হতে পারে। ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের গবেষণা অনুযায়ী, শুল্ক থেকে প্রাপ্ত অর্থের একটি বড় অংশই মূলত মার্কিন ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আসে, কারণ আমদানিকৃত পণ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে স্থানীয় বাজারে এর প্রভাব পড়ে। এছাড়া, শুল্ক যুদ্ধের কারণে মার্কিন রপ্তানিকারকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, বিশেষত কৃষি ও শিল্প খাতে।
মার্চ মাসের জন্য ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের পূর্ণাঙ্গ বাজেট বিবরণী এই বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হবে, যা শুল্ক আয়ের সর্বশেষ চিত্র তুলে ধরবে। তবে, ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি যে কীভাবে তারা দৈনিক ২০০ কোটি ডলার আয়ের হিসাব পেয়েছেন। ট্রাম্প মূলত এই শুল্ক নীতিকে তিনি ‘মার্কিন শ্রমিক ও শিল্পের স্বার্থ রক্ষার হাতিয়ার’ বলে বর্ণনা করেছেন।
তবে, বিরোধী ডেমোক্র্যাটরা এটিকে ‘অর্থনৈতিক বিভ্রান্তি’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। ট্রাম্পের শুল্ক নীতি শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, বৈশ্বিক বাণিজ্যেও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। চীন ও ইউরোপের সঙ্গে বাণিজ্য সংঘাতের কারণে বিশ্ব বাজারে পণ্যের দাম ও সরবরাহ শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছে। আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক এরই মধ্যে সতর্ক করেছে যে এই নীতি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.