ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

 

গত ফেব্রুয়ারি থেকে যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে (ওভাল অফিস) প্রবেশ এবং প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এয়ার ফোর্স ওয়ান উড়োজাহাজে ভ্রমণের সুযোগ থেকে এপি’র সাংবাদিক ও আলোকচিত্রীদের বিরত রাখা হয়। কারণ হিসেবে ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, এপি ‘গালফ অব আমেরিকা’ না লিখে ‘গালফ অব মেক্সিকো’ লিখেছে যা প্রেসিডেন্টের নির্দেশনার পরিপন্থী।

 

এপ্রিলে, জেলা আদালতের বিচারক ট্রেভর ম্যাকফ্যাডেন এই সিদ্ধান্তকে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী অর্থাৎ মত প্রকাশ ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা লঙ্ঘন বলে রায় দিয়েছিলেন।

 

তবে শুক্রবার ওয়াশিংটন-ভিত্তিক ফেডারেল আপিল আদালতের একটি বিচারক প্যানেল বলেছেন, আপিল প্রক্রিয়া চলাকালে সরকার এপি’কে ‘প্রেসিডেন্টের সংরক্ষিত এলাকা’ থেকে দূরে রাখতে পারবে। আদালতের মতে, এসব জায়গা প্রথম সংশোধনীর আওতাভুক্ত নয়।

 

রায়ে বলা হয়েছে, ‘হোয়াইট হাউস কোন সাংবাদিককে প্রবেশাধিকার দেবে, সেটি নির্ধারণের পূর্ণ স্বাধীনতা প্রেসিডেন্টের রয়েছে এমনকি সেটি মতভেদের কারণে হলেও।’

 

রায়ে আরো বলা হয়েছে, ‘এই আদেশ স্থগিত না থাকলে প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত কর্মক্ষেত্রের স্বাধীনতা ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যা সরকারের অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হতে পারে।’

 

‘বড় জয়’ বললেন ট্রাম্প

 

রায়ের পর ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালের এক পোস্টে লিখেছেন, ‘আজ এপি’র বিরুদ্ধে বড় জয়!’ 

 

তিনি অভিযোগ করেছেন, ‘তারা ‘গালফ অব আমেরিকা’ নিয়ে সত্য বা প্রকৃত তথ্য বলতে অস্বীকার করেছে। মিথ্যা সংবাদ!’

 

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এর এক পোস্টে জানান, ‘জয়! শুরু থেকেই আমরা বলছিলাম প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে কাভার করার জন্য ওভাল অফিস, এয়ার ফোর্স ওয়ান কিংবা অন্য স্পর্শকাতর স্থানে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বিশেষ প্রবেশাধিকারের দেওয়া হবে না।’

 

১৮০ বছরের পুরোনো সংবাদ সংস্থা এপি এখনো ‘গালফ অব মেক্সিকো’ নামেই অঞ্চলটিকে উল্লেখ করে চলেছে। তাদের স্টাইল গাইডে বলা হয়েছে, ‘এই উপসাগর গত ৪শ’ বছরের বেশি সময় ধরে ‘গালফ অব মেক্সিকো’ নামেই পরিচিত। ট্রাম্প নতুন যে নাম প্রস্তাব করেছেন, তা উল্লেখ করা হলেও আমরা এর মূল নামই ব্যবহার করব।’

 

ট্রাম্প এর আগেও মূলধারার সংবাদমাধ্যমকে ‘জনগণের শত্রু’ বলে মন্তব্য করেছেন। পুনরায় প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই তার প্রশাসন হোয়াইট হাউস কভারেজের ধরনে বড় পরিবর্তন এনেছে। মূলধারার সাংবাদিকদের বদলে তিনি প্রাধান্য দিচ্ছেন রক্ষণশীল পডকাস্টার ও ইনফ্লুয়েন্সারদের।

 

এপি’কে নিষিদ্ধ করার মাত্র দুই সপ্তাহ পর হোয়াইট হাউস প্রায় একশ’ বছরের পুরোনো সেই রীতিকেও বাতিল করে দেয় যেখানে মিডিয়া হাউসগুলো নির্ধারণ করতো প্রতিদিন প্রেসিডেন্ট ইভেন্ট কাভার করতে কোন কোন রিপোর্টার বা ফটোগ্রাফার থাকবেন।

 

এছাড়া, ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত বিদেশি মিডিয়া প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন, ভয়েস অফ আমেরিকা, রেডিও ফ্রি ইউরোপ বা রেডিও লিবার্টি ও রেডিও ফ্রি এশিয়া বাতিল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। পাশাপাশি, ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও (এনপিআর) ও পাবলিক ব্রডকাস্টিং সার্ভিস (পিবিএস)-এর সরকারি তহবিল কমিয়ে দেওয়ার উদ্যোগও গ্রহণ করেছে।