এপ্রিল মাস থেকে ওমানের মধ্যস্থতায় দুই দেশ পাঁচ দফা আলোচনা করেছে।

 

তেহরান এবং বিশ্ব পরাশক্তিগুলোর মধ্যে একটি ঐতিহাসিক চুক্তির চেষ্টা করছে। সেখানে ইরানের পরমাণু কর্মকাণ্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিনিময়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে তার প্রথম মেয়াদে চুক্তিটি ত্যাগ করার আগে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছিল।

 

ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভিতে সম্প্রচারিত একটি ভিডিওতে সংসদের স্পিকার মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফ বলেছেন, ‘ পরিকল্পনায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কথাও উল্লেখ করা হয়নি।’

 

তিনি এটিকে অসততার লক্ষণ বলে অভিহিত করেছেন। আমেরিকানদের বিরুদ্ধে এমন একটি ‘একতরফা’ চুক্তি আরোপ করার চেষ্টা করার অভিযোগ করেছেন যা তেহরান মেনে নেবে না।

 

গালিবাফ বলেছেন, ‘ভ্রান্ত প্রেসিডেন্টের আরো ভালভাবে জানা উচিত এবং যদি তিনি সত্যিই কোনো চুক্তি খুঁজছেন তাহলে তার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করা উচিত।’

 

৩১ মে পঞ্চম দফা আলোচনার পর ইরান বলেছিল, তারা একটি প্রস্তাবের ‘উপাদান’ পেয়েছে, পরে কর্মকর্তারা খসড়া লেখায় ‘অস্পষ্টতা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

 

যুক্তরাষ্ট্র এবং তার পাশ্চাত্যের মিত্ররা দীর্ঘদিন ধরেই ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র অর্জনের চেষ্টার অভিযোগ করে আসছে, যা ইরান ধারাবাহিকভাবে অস্বীকার করে আসছে।

 

ইরান জোর দিয়ে বলেছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি কেবল শান্তিপূর্ণ উদ্দেশে পরিচালিত হচ্ছে।

 

আলোচনার মূল বিষয়গুলো হলো অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা অপসারণ এবং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ।

 

তেহরান বলেছে, পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির অধীনে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অধিকার তাদের রয়েছে। অন্যদিকে ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের যেকোনো সমৃদ্ধকরণকে ‘লাল রেখা’ বলে অভিহিত করেছে।

 

জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞার ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রচারণা পুনরুজ্জীবিত করা ট্রাম্প বারবার বলেছেন, সম্ভাব্য চুক্তির অধীনে তাকে কোনো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অনুমতি দেয়া হবে না।

 

মঙ্গলবার ইরানের শীর্ষ আলোচক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, তার দেশ ‘ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাওয়ার জন্য কারো কাছে অনুমতি চাইবে না।’

 

জাতিসঙ্ঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা, আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা অনুসারে, ইরান বিশ্বের একমাত্র পরমাণু বিহীন অস্ত্রধারী রাষ্ট্র যারা ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে- যা এখনো পরমাণু ওয়ারহেডের জন্য প্রয়োজনীয় ৯০ শতাংশ সীমার চেয়ে কম।

 

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং বলেছেন, সমৃদ্ধকরণ ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ‘চাবিকাঠি’।

 

আইএইএ বোর্ড অব গভর্নরস এই মাসের শেষের দিকে ভিয়েনায় বৈঠক করবেন এবং ইরানের পরমাণু কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা করবেন।