রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তেহরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে টার্গেট করা বন্ধ করার জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। ক্রেমলিনের দাবি, চলমান বোমাবর্ষণ বিশ্বব্যাপী ‘পারমাণবিক বিপর্যয়’ ডেকে আনতে পারে।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (MFA) এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ইসরায়েলের অব্যাহত তীব্র আক্রমণ আন্তর্জাতিক আইনকে অমান্য করে। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে। বিশ্বকে একটি পারমাণবিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেয়-যার পরিণতি ইসরায়েলসহ বিশ্বব্যাপী অনুভূত হবে।

ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সংঘাত আরো জোরালো হচ্ছে। ইসরায়েল ইতিমধ্যেই ইরানের বেশ কয়েকজন শীর্ষ সামরিক নেতা এবং পারমাণবিক বিজ্ঞানীকে হত্যা করেছে। তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধে সরাসরি সম্পৃক্ত হতে যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছে।

ইরানের পারমাণবিক হুমকি দূর করার লক্ষ্যে ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। যদিও ইরান দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বেসামরিক উদ্দেশ্যে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে মার্কিন সম্পৃক্ততার বিভিন্ন দিক বিবেচনা করছেন। রাশিয়ার ইন্টারফ্যাক্স সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, দেশের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ বুধবার সতর্ক করে বলেছেন যে, ইসরায়েলকে সরাসরি সামরিক সহায়তা মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলবে। এটি এমন একটি পদক্ষেপ হবে যা পুরো পরিস্থিতিকে আমূলভাবে বদলে দিতে পারে।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার বিবৃতিতে বলেছে যে, তারা বিশ্বাস করে ইরানের নেতারা পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি (এনপিটি) অনুসরণ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তারা কেবল ‘শান্তিপূর্ণ’ পারমাণবিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মস্কো যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা পুনরায় শুরু করার পক্ষেও সমর্থন প্রকাশ করেছে।

বৃহস্পতিবার ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েলের আকস্মিক হামলার ফলে সপ্তাহান্তে অনুষ্ঠিত হতে চলা সর্বশেষ আলোচনাটিও ভেস্তে গেছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পর্কে যেকোনো ভিত্তিহীন সন্দেহ দূর করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পুনরায় আলোচনা শুরু হওয়া প্রয়োজন। কারণ ইরান এনপিটির অধীনে বাধ্যবাধকতাগুলোর প্রতি তার অটল প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে এসেছে।

মস্কো ইরানের অবস্থানকে সমর্থন করে এবং দৃঢ়ভাবে জানাতে চায় যে, একটি টেকসই সমাধান কেবল কূটনীতি এবং আলোচনার মাধ্যমেই অর্জন করা যেতে পারে। পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধের মূল ভিত্তি হলো এনপিটি। আগ্রাসনের মাধ্যমে বা নিরীহ জীবনের বিনিময়ে তা রোধ করা উচিত নয়।’

রাশিয়া পশ্চিমা দেশগুলোকে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সামরিক সংঘাতকে নিজ স্বার্থ সিদ্ধির জন্য ব্যবহার করার অভিযোগ তুলেছে।