08/06/2025 চীনে ৭০০০ জনের চিকুনগুনিয়া শনাক্ত
মুনা নিউজ ডেস্ক
৫ আগস্ট ২০২৫ ২৩:০২
চীনের গুয়াংডং প্রদেশে জুলাই মাস থেকে মশাবাহিত চিকুনগুনিয়া ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে কমপক্ষে ৭০০০ মানুষ। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোভিড-১৯ মহামারির সময় নেয়া কঠোর ব্যবস্থার অনুরূপ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করছে কর্তৃপক্ষ। এ খবর দিয়ে অনলাইন বিবিসি বলছে, ফোশান শহর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে। সেখানে চিকুনগুনিয়া রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হচ্ছে। আর তাদের বিছানাগুলো মশারি দিয়ে আবৃত রাখা হচ্ছে।
রোগীরা শুধু পরীক্ষায় নেগেটিভ আসার পর অথবা সাতদিনের চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাচ্ছেন। মশার কামড়ে ছড়ানো এই ভাইরাসে জ্বর ও তীব্র গিঁটব্যথা দেখা যায়, যা কিছু ক্ষেত্রে বহু বছর স্থায়ী হতে পারে। চীনে এ ভাইরাস বিরল হলেও, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং আফ্রিকার কিছু অঞ্চলে চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব সাধারণ ঘটনা। ফোশান ছাড়াও গুয়াংডং প্রদেশের আরও কমপক্ষে ১২টি শহরে এ ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
শুধু গত সপ্তাহেই প্রায় ৩০০০টি নতুন রোগীর তথ্য পাওয়া গেছে। সোমবার হংকং-এ প্রথম আক্রান্ত রোগীর খবর পাওয়া যায়। সেখানে ১২ বছর বয়সী একটি ছেলে জুলাই মাসে ফোশান সফরের পর জ্বর, চর্মরোগ ও গিঁটব্যথায় ভুগতে শুরু করে। ভাইরাসটি একজন থেকে আরেকজনে সরাসরি ছড়ায় না। এটি তখনই ছড়াতে পারে যখন একজন আক্রান্ত মানুষকে মশা কামড়ায় এবং পরে সেই মশাটি অন্য কাউকে কামড়ায়।
চীনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত সব আক্রান্ত রোগীই মৃদু উপসর্গে ভুগছেন। শতকরা ৯৫ ভাগ রোগী সাত দিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তবে, ভাইরাসটি দেশটিতে খুব বেশি পরিচিত না হওয়ায় কিছুটা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। চীনের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ওয়েইবোতে একজন লিখেছেন, এটা ভয়ানক। দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা খুবই কষ্টদায়ক মনে হচ্ছে
এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র চীনে ভ্রমণকারীদের জন্য বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে। গুয়াংডং প্রদেশজুড়ে কর্তৃপক্ষ দৃঢ় ও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। জ্বর, গিঁটব্যথা বা চর্মরোগ দেখা দিলে নাগরিকদের দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, যাতে পরীক্ষা করে চিকুনগুনিয়া শনাক্ত করা যায়। বাসাবাড়িতে ফুলের টব, কফি মেশিন বা খালি বোতলের মতো জায়গায় জমে থাকা পানি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তা না মানলে ১০০০০ ইউয়ান (১,৪০০ ডলার) পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। ভাইরাস ছড়ানো মশা নিধনের লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ বড় আকারের ‘হাতি মশা’ ছাড়ছে। এগুলো ছোট মশাগুলোকে খেয়ে ফেলতে পারে। সেই সঙ্গে মশা খেকো মাছও ছাড়া হয়েছে। গত সপ্তাহে ফোশান শহরের লেকে ৫০০০টি লার্ভা খাওয়া মাছ ছাড়া হয়েছে। শহরের কিছু অংশে ড্রোন উড়িয়ে কোথায় কোথায় পানি জমে আছে তা শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
আগে কিছু প্রতিবেশী শহরে ফোশান থেকে যাওয়া যাত্রীদের ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। তবে পরে তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এত কড়াকড়ির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। কেউ কেউ কোভিড-১৯ সময়ের অভিজ্ঞতার সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছেন। ওয়েইবোতে এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, সবকিছু যেন অনেক পরিচিত লাগছে। কিন্তু এসব কি আদৌ দরকার? আরেকজন মন্তব্য করেছেন, কোয়ারেন্টাইনের দরকার কী? আক্রান্ত কেউ তো আর গিয়ে অন্যকে কামড়াবে না! চীনে কোভিড-১৯ সময় কঠোর বিধিনিষেধ চালু ছিল। এর মধ্যে ছিল কোয়ারেন্টাইন ক্যাম্প, আবাসিক ভবন বা গোটা এলাকা সিল করে দেয়া।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.