08/13/2025 আরও ৯০ দিন বাড়ল যুক্তরাষ্ট্র-চীন শুল্ক বিরতির মেয়াদ
মুনা নিউজ ডেস্ক
১২ আগস্ট ২০২৫ ২১:১৬
যুক্তরাষ্ট্র ও চীন তাদের পাল্টাপাল্টি শুল্ক কার্যকরের সময়সীমা আরও ৯০ দিন বাড়িয়েছে। এতে চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত তিন অঙ্কের শুল্ক আপাতত কার্যকর হচ্ছে না। স্থানীয় খুচরা বিক্রেতারা যখন বছর শেষের ছুটির মৌসুমকে সামনে রেখে পণ্যের মজুত বাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখনই এমন ঘোষণা এল।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে বলেছেন, তিনি একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। এর আওতায় আগামী ১০ নভেম্বর রাত ১২টা ১ মিনিট (ইস্টার্ন স্ট্যান্ডার্ড টাইম) পর্যন্ত বাড়তি শুল্ক আরোপ স্থগিত থাকবে। পারস্পরিক শুল্ক বিরতির অন্য সব শর্তও অপরিবর্তিত থাকবে।
মঙ্গলবার সকালে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও একই ধরনের ঘোষণা দিয়েছে। বেইজিং আরও বলেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে শুল্কবহির্ভূত ব্যবস্থাগুলো স্থগিত বা বাতিল করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে। রোববার ট্রাম্প চীনের কাছে দাবি করেছিলেন, দেশটি যেন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সয়াবিন কেনার পরিমাণ চার গুণ বাড়ায়। তবে নির্বাহী আদেশে অতিরিক্ত কেনাকাটার বিষয়ে কোনো উল্লেখ ছিল না।
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, ‘আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্কের মধ্যে বাণিজ্যিক অসমতা এবং এর ফলে তৈরি হওয়া জাতীয় ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তাসংক্রান্ত উদ্বেগগুলো সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র এখনো গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে। এই আলোচনার মাধ্যমে (চীন) বাণিজ্যিক অসমতা দূর করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও জাতীয় নিরাপত্তা-সম্পর্কিত উদ্বেগগুলো মোকাবিলা করছে।’
বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যকার শুল্কযুদ্ধ বিরতির মেয়াদ সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে এখন নভেম্বরের শুরু পর্যন্ত সময় মেয়াদ বাড়ায় বড়দিনকে সামনে রেখে ইলেকট্রনিকস, পোশাক ও খেলনাসহ নানা পণ্য কম শুল্কে আনার সুযোগ তৈরি হলো।
নতুন আদেশের মধ্য দিয়ে চীনা পণ্য আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রের ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আর স্থাণীয় পণ্যের ওপর বেইজিং আরোপিত ১২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকরের সিদ্ধান্ত আরও ৯০ দিনের জন্য স্থগিত হলো। এতে আপাতত চীনা পণ্যে ৩০ শতাংশ আর যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক বজায় থাকবে।
এর আগে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প এ বিষয়ে বলেন, ‘দেখা যাক কী হয়।’ চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিংয়ের সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্ক আছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প সিএনবিসিকে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একটি বাণিজ্যচুক্তির খুব কাছাকাছি পৌঁছেছে এবং যদি চুক্তি হয়, তাহলে তিনি বছর শেষ হওয়ার আগে শি চিন পিংয়ের সঙ্গে দেখা করবেন।
এ ব্যাপারে এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়েন্ডি কাটলার বলেন, ‘এটা ইতিবাচক খবর। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে উত্তেজনা কমানোর জন্য কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এতে বোঝা যায়, দুই পক্ষই এমন একটা চুক্তিতে পৌঁছাতে চাইছে, যার ভিত্তিতে শি আর ট্রাম্প এই শরৎকালে বৈঠক করতে পারেন।
গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন দুই পক্ষ সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আলোচনার পর তাদের বাণিজ্যিক বিরোধে সাময়িক বিরতি টানার ঘোষণা দেয়। আরও আলোচনার সুযোগ পেতে তারা ৯০ দিনের জন্য বিরতিতে পৌঁছেছিল। জুলাই মাসের শেষ দিকে উভয় পক্ষ সুইডেনের স্টকহোমে আবারও দেখা করে। তখন যুক্তরাষ্ট্রের আলোচকদের বলা হয় তারা যেন ট্রাম্পকে সময়সীমার মেয়াদ বাড়ানোর পরামর্শ দেন।
অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বারবার বলেছেন, বসন্তকালে দুই পক্ষই একে অপরের পণ্যে তিন অঙ্কের যে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যা চালানো সম্ভব নয়। পাল্টাপাল্টি শুল্ককে কেন্দ্র করে বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের মধ্যে অনেকটা বাণিজ্যিক অবরোধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়।
A Publication of MUNA National Communication, Media & Cultural Department. 1033 Glenmore Ave, Brooklyn, NY 11208, United States.