সিনেটে ৯০১ বিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা বিল পাস

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ২৩:১০

ছবি : সংগৃহীত ছবি : সংগৃহীত

সিনেট ৯০১ বিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা বিল পাস করা হয়েছে। ২০২৬ অর্থবছরের জন্য এ বিল পাস করা হয়। এতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অগ্রাধিকারগুলোর পাশাপাশি সামরিক ক্ষমতার ওপর কংগ্রেসের নজরদারি বজায় রাখার বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ন্যাশনাল ডিফেন্স অথরাইজেশন অ্যাক্ট (এনডিএএ) নামের এই বিলটি বুধবার সিনেটে ৭৭-২০ ভোটে অনুমোদিত হয়। এর আগে গত মাসে প্রতিনিধি পরিষদে পাস হওয়া একই বিল গ্রহণ করা হয়। এখন এটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্বাক্ষরের জন্য পাঠানো হবে।

বিলে ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতাদের উদ্যোগে, কিছু রিপাবলিকানের সমর্থনে, ইউরোপে সামরিক উপস্থিতি দ্রুত কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে প্রশাসনের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বিল অনুযায়ী, ন্যাটো মিত্রদের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া এবং তা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থে—এমন সিদ্ধান্ত ছাড়া ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা সংখ্যা ৭৬ হাজারের নিচে নামানো যাবে না। বর্তমানে ইউরোপে সাধারণত ৮০ হাজার থেকে এক লাখ যুক্তরাষ্ট্রের সেনা মোতায়েন থাকে। একইভাবে, দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনা সংখ্যা ২৮ হাজার ৫০০-এর নিচে নামানোও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

কংগ্রেস ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে ইউক্রেন সিকিউরিটি অ্যাসিস্ট্যান্স ইনিশিয়েটিভের আওতায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন দিয়েছে। এ অর্থ আগামী দুই বছরে প্রতি বছর ৪০০ মিলিয়ন ডলার করে ছাড় করা হবে। পাশাপাশি ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র উৎপাদনে আরও বছরে ৪০০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে। এটি ইউরোপের নিরাপত্তা নিয়ে ওয়াশিংটনের অঙ্গীকারকে আরও দৃঢ় করেছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিলটি এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গুরুত্ব দিয়েছে। এ অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক প্রভাব মোকাবিলায় তাইওয়ান সিকিউরিটি কো-অপারেশন ইনিশিয়েটিভের জন্য ১ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

বিলে ইসরায়েলের জন্য ৬০০ মিলিয়ন ডলারের নিরাপত্তা সহায়তা অনুমোদন করা হয়েছে, যার মধ্যে আয়রন ডোমসহ যৌথ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা কর্মসূচির অর্থায়ন রয়েছে। এ বিষয়ে কংগ্রেসে দীর্ঘদিন ধরেই দ্বিদলীয় সমর্থন রয়েছে।

এনডিএএ যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কার্যক্রমে রিপোর্টিংয়ের বাধ্যবাধকতা বাড়িয়েছে। বিশেষ করে ক্যারিবিয়ান ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে চোরাচালান ও মানবপাচার সন্দেহে চালানো হামলা সম্পর্কে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে কংগ্রেসকে বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে বলে বিলে ‍উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভেনেজুয়েলার কাছে আন্তর্জাতিক জলসীমায় কথিত মাদক পাচারকারী নৌকায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ভিডিও ফুটেজ সরবরাহের বিষয়েও চাপ বাড়ানো হয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে এমন এক হামলায় দুজন নিহত হওয়ার পর থেকেই নজরদারি জোরদারের দাবি ওঠে।

বিলটি ২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধের অনুমোদন এবং ১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধের অনুমোদন বাতিল করেছে। উভয় দলের সমর্থকদের মতে, এতে ভবিষ্যতে কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া সামরিক অভিযানের ঝুঁকি কমবে। এ ছাড়া সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনামলে সিরিয়ার ওপর আরোপিত যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা স্থায়ীভাবে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সমর্থকদের মতে, এতে সিরিয়ার পুনর্গঠনে সহায়তা মিলবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: