ফাইল ছবি
                                    ইসরায়েলকে ইরানের কবল থেকে রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি এমন অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। গত মঙ্গলবার ইসরায়েলের একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘হামলা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন। তবে ইরানের বিবৃতিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে হোয়াইট হাউস। আমরা মনে করি, যে হামলাটি করা উচিত বলে তারা মনে করছে, সেটি করার জন্য তারা প্রস্তুত। ফলে এই অঞ্চলে আমাদের বর্ধিত শক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনা রয়েছে।’
বাইডেন প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ইরানের প্রতি আমাদের বার্তা আগেও সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল এবং ভবিষ্যতেও তা-ই থাকবে। প্রথমত, তাদের বলব, কাজটি করবেন না। উত্তেজনার পারদ আরও বাড়িয়ে তোলার কোনো কারণ নেই। কোনো ধরনের আঞ্চলিক যুদ্ধ শুরুর প্রয়োজন নেই। দ্বিতীয়ত, তার পরও এমনটি হলে ইসরায়েলের সুরক্ষায় আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’
এদিকে ফিলিস্তিন অধিকৃত পশ্চিম তীরের উত্তরাঞ্চলে গতকাল বুধবার নতুন করে বড় ধরনের স্থল ও বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, নতুন করে পশ্চিম তীরের আল-ফারা শরণার্থীশিবিরে বিমান হামলায় পাঁচজন এবং জেনিনে ড্রোন হামলা ও সশস্ত্র সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, তাঁরা জেনিন ও তুলকারমে ‘সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান’ চালাচ্ছে। এটি বড় ধরনের অভিযান হিসেবে প্রতীয়মান হচ্ছে। জেনিন, তুলকারেম, নাবলুস ও তুবাসের মতো বড় চারটি ফিলিস্তিনি শহরকে একই সময়ে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। দ্বিতীয় ইন্তিফাদার পর ফিলিস্তিনের বিভিন্ন বড় শহরে একসঙ্গে এমন হামলা এটিই প্রথম।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, ‘গাজায় সন্ত্রাসীদের যেভাবে নির্মূল করা হচ্ছে, ঠিক সেভাবেই এই ঝুঁকি মোকাবিলা করতে হবে। প্রয়োজনে গাজার মতো পশ্চিম তীরের বাসিন্দাদেরও সাময়িকভাবে অন্যত্র সরে যেতে বলা হবে। প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নিতে হবে। এটি একটি যুদ্ধ এবং এই যুদ্ধে অবশ্যই আমাদের বিজয়ী হতে হবে।’
ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্টের একজন মুখপাত্র আহমেদ জিব্রিল বলেছেন, অধিকৃত পশ্চিম তীরের উত্তরে কয়েকটি শহরে ইসরায়েলি অভিযানে ১১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে জেনিন শহরে দুজন, কাছাকাছি একটি গ্রামে চারজন এবং তুবাস শহরের কাছে একটি শরণার্থীশিবিরে পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
ফরাসি সংবাদমাধ্যম এএফপির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে পশ্চিম তীরে ৬৪০ জনের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল।
ওদিকে দক্ষিণ গাজা উপত্যকার একটি টানেল থেকে এক জিম্মিকে উদ্ধারের দাবি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গত মঙ্গলবার উদ্ধারকৃত ওই জিম্মির নাম কাইদ ফারহান আল কাদি। তিনি একজন বেদুইন। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলার সময় জিম্মি হিসেবে তাঁকে তুলে নিয়ে যায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। তবে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে কর্তৃপক্ষ।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলের একটি গুদামে প্রহরী হিসেবে কাজ করছিলেন কাইদ ফারহান আল কাদি। এ সময় অন্য ২৫০ ইসরায়েলির সঙ্গে তাঁকেও গাজায় নিয়ে যায় হামাস। মঙ্গলবার তাঁকে উদ্ধারের পর সামাজিক যোগাযোগেরমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত বলেন, ‘আমরা জিম্মিদের বাড়ি ফিরিয়ে আনার প্রতিটি সুযোগ কাজে লাগাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ‘সন্ত্রাসীদের তহবিল’ জোগান দেওয়ার জন্য ইরানকেও অভিযুক্ত করেন ইয়োভ গ্যালান্ত। তিনি বলেন, তারা পশ্চিম তীরে পূর্বাঞ্চলীয় ফ্রন্ট তৈরি করছে। এ ক্ষেত্রে গাজা ও লেবানন মডেল অনুসরণ করা হচ্ছে।
            
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: