চীন-রাশিয়ার বিরোধিতা

গোল্ডেন ডোম প্রকল্প পরিকল্পনা প্রকাশ করলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২২ মে ২০২৫ ০৩:৪৭

ছবি : সংগৃহীত ছবি : সংগৃহীত

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে এক ঘোষণায় ‘গোল্ডেন ডোম’ নামে একটি নতুন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন। এটি বাস্তবায়নে প্রাথমিকভাবে ২৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প জানান, প্রকল্পটি সম্পূর্ণ বাস্তবায়নে খরচ দাঁড়াতে পারে প্রায় ১৭৫ বিলিয়ন ডলার।

ট্রাম্প বলেন, নির্বাচনী প্রচারণায় আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম- একটি অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলব। এখন আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে আমরা এই ‘গোল্ডেন ডোম’-এর স্থাপত্য নকশা চূড়ান্ত করেছি। তিনি বলেন, এই ব্যবস্থা শত্রুপক্ষের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এমনকি মহাকাশ থেকে উৎক্ষেপণ করা ক্ষেপণাস্ত্রও প্রতিহত করতে সক্ষম হবে। আমাদের জাতির ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই পরিকল্পনার নেতৃত্বে থাকবেন ইউএস স্পেস ফোর্সের জেনারেল মাইকেল গেটলাইন।

ট্রাম্প আরও জানান, কানাডা ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পে অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যদিও ট্রাম্প মোট খরচ ১৭৫ বিলিয়ন ডলার বলে উল্লেখ করেন, কংগ্রেশনাল বাজেট অফিস জানিয়েছে, একটি সীমিত পরিসরে আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র রোধের মহাকাশভিত্তিক ব্যবস্থা তৈরি করতে ২০ বছরে ব্যয় হতে পারে ১৬১ থেকে ৫৪২ বিলিয়ন ডলার।

পেন্টাগন প্রধান পিট হেগসেথ বলেন, এই সিস্টেম আমাদের মূল ভূখণ্ডকে ক্রুজ মিসাইল, ব্যালিস্টিক মিসাইল, হাইপারসনিক মিসাইল, ড্রোন, পারমাণবিক বা প্রচলিত যেকোনো হামলা থেকে রক্ষা করবে।

গোল্ডেন ডোমের ধারণা নেয়া হয়েছে ইসরাইলে আয়রন ডোম ব্যবস্থা থেকে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনা অনেক বেশি বিস্তৃত- যা স্থল, জল ও মহাকাশ জুড়ে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে গড়ে তোলা হবে।

রাশিয়া ও চীন এই পরিকল্পনাকে ‘গভীরভাবে অস্থিতিশীল’ আখ্যা দিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছে। দুই দেশের আলোচনার পর ক্রেমলিন এক বিবৃতিতে জানায়, এই পরিকল্পনা ‘মহাকাশে যুদ্ধক্ষেত্র তৈরি করার ঝুঁকি তৈরি করছে। চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি প্রতিযোগিতা বাড়ছে। রাশিয়া উন্নত আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র ও নিখুঁত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার অস্ত্র তৈরি করছে- এই বাস্তবতা এই ধরনের প্রতিরক্ষা পরিকল্পনার পেছনে অন্যতম চালিকাশক্তি।

যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক যুদ্ধ অভিজ্ঞতা, বিশেষত ইউক্রেন যুদ্ধ ও ইরানের হামলা প্রতিহত করার ক্ষেত্রে, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষায় অনেক বাস্তবভিত্তিক জ্ঞান অর্জন করেছে। ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ছোড়া ড্রোন প্রতিরোধেও যুক্তরাষ্ট্র কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। ২০২২ সালের ‘মিসাইল ডিফেন্স রিভিউ’ অনুযায়ী, উত্তর কোরিয়া ও ইরানের ব্যালিস্টিক মিসাইল হুমকি, এবং বি-রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর রকেট হামলা, ভবিষ্যতের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ হিসেবেই চিহ্নিত।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: