উত্তেজনার মধ্যেই বিশেষ দূতকে রাশিয়া পাঠাচ্ছেন ট্রাম্প

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৪ আগস্ট ২০২৫ ২২:১৯

ছবি : সংগৃহীত ছবি : সংগৃহীত

আগামী সপ্তাহে রাশিয়া সফরে যেতে পারেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল রোববার নিজেই এ খবর দিয়েছেন। ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে চলা উত্তেজনার মধ্যেই এ ঘোষণা এল।

ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে চুক্তিতে রাজি হতে রাশিয়াকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন ট্রাম্প, নতুবা দেশটির ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছেন তিনি। যদিও সেসব নিষেধাজ্ঞা কী হতে পারে ট্রাম্প তা নির্দিষ্ট করে বলেননি। এ নিয়ে ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে।

রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট ও বর্তমানে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভের সঙ্গে অনলাইনে বাগ্‌বিতণ্ডার পর তিনি যে দুটি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েন করেছেন, সেগুলো এখনো ‘ওই অঞ্চলে’ অবস্থান করছে।

অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুঁশিয়ারি এবং সাবমেরিন মোতায়েনের ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে পারমাণবিক উত্তেজনা বাড়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যেই ট্রাম্প রোববার বলেন, ‘আমার মনে হয়, আগামী সপ্তাহের বুধ বা বৃহস্পতিবার উইটকফ রাশিয়া সফরে যাবেন।’

সাবমেরিনগুলো পারমাণবিক শক্তিচালিত নাকি পারমাণবিক অস্ত্রসজ্জিত, সে বিষয়ে ট্রাম্প স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। তিনি সাবমেরিনগুলোর নির্দিষ্ট অবস্থান সম্পর্কেও বিস্তারিত কিছু জানাননি। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী সাধারণত তাদের সাবমেরিনের সুনির্দিষ্ট অবস্থান গোপন রাখে।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইতিমধ্যে মস্কোয় একাধিকবার উইটকফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, তবে ট্রাম্পের ক্রেমলিনের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের প্রচেষ্টা স্থবির হয়ে যাওয়ার আগে ওই সব বৈঠক হয়েছে।

রোববার সাংবাদিকেরা ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, উইটকফ মস্কোয় কী বার্তা নিয়ে যাচ্ছেন এবং রাশিয়া নিষেধাজ্ঞা এড়াতে কিছু করতে পারে কি না। জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘হ্যাঁ, এমন একটি চুক্তি হোক, যেন মানুষ হত্যা বন্ধ হয়।’

এর আগে ট্রাম্প হুমকির সুরে আরও বলেন, নতুন পদক্ষেপের অংশ হিসেবে চীন ও ভারতের মতো রাশিয়ার বাকি বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর দ্বিতীয় স্তরের শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। এতে রাশিয়ার ওপর চাপ আরও বাড়বে ঠিকই, তবে একই সঙ্গে বৈশ্বিক অস্থিরতার ঝুঁকিও তৈরি হবে।

এদিকে ওয়াশিংটনের চাপ সত্ত্বেও রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে। পুতিন গত শুক্রবার বলেছেন, তিনি শান্তি চান, তবে ইউক্রেনে প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে চলা আগ্রাসন বন্ধে তাঁর যেসব শর্ত ছিল তা এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে। পুতিনের শর্তগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ইউক্রেনের যে অঞ্চলগুলো রাশিয়া দখল করেছে, সেগুলো ছেড়ে দিতে হবে এবং ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করতে হবে।

নিজের নির্বাচনী প্রচারের সময় ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় গেলে দ্রুত ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করবেন। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহে ট্রাম্পের এই প্রচেষ্টা বারবার ব্যর্থ হয়েছে এবং রাশিয়ার সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে পুতিনের ওপর বিরক্তি প্রকাশ করতে শুরু করেছেন ট্রাম্প।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: