
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অস্ট্রেলিয়ার সাংবাদিক সমাজকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেছেন, সাংবাদিকেরাই ‘অস্ট্রেলিয়ার ক্ষতি করছে।’ সম্প্রতি এক অস্ট্রেলীয় সাংবাদিক ট্রাম্পের কাছে জানতে চান, গত জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তিনি নিজের ব্যবসায় প্রেসিডেন্সি ক্ষমতার কতটা ফায়দা নিয়েছেন।
হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর থেকে ট্রাম্পের সম্পদ কতটা বেড়েছে, সে বিষয়ে জানতে চান অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (এবিসি) জন লায়নস। জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জানি না।’ এ সময় তিনি বলেন, তাঁর সন্তানেরা পারিবারিক ব্যবসা দেখভাল করছেন।
এ সময় ট্রাম্প জন লায়নসকে আক্রমণ করে বলেন, ‘আমার মতে, আপনি এখনই অস্ট্রেলিয়ার অনেক ক্ষতি করছেন এবং তারা (অস্ট্রেলিয়া সরকার) আমার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে চায়।’ ট্রাম্প আরও জানান, তিনি খুব ‘শিগগির’ অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। তিনি বলেন, ‘আমি তাঁকে আপনার কথা বলব। আপনি খুব খারাপ ভাবমূর্তি তৈরি করেছেন।’
লায়নস আরেকটি প্রশ্ন করতে চাইলে ট্রাম্প আঙুল ঠোঁটের সামনে তুলে ধরে এবং তাঁকে ‘চুপ’ করতে বলে অন্য সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলতে এগিয়ে যান। অ্যান্থনি আলবানিজ দীর্ঘ কয়েক মাস ধরেই প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করতে চাইছেন। নানা কারণে গত জুনে তাদের একটি বৈঠক ভেস্তে যায়।
তবে আগামী সপ্তাহে আলবানিজ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন। সে সময় ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হবে বলে গত সোমবার জানান আলবানিজ। তিনি জানান, তিনি এবং ট্রাম্প ‘নিউইয়র্কে দেখা করবেন।’ তিনি বলেন, ‘তিনি (ট্রাম্প) আগামী সপ্তাহের মঙ্গলবার রাতে একটি রিসেপশন আয়োজন করছেন। এ ছাড়া, বছরের শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন ফোরামে আমরা একে অপরকে দেখতে পাব বলে আশা রাখি।’
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র-অস্ট্রেলিয়া সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। কারণ, ট্রাম্প প্রশাসন ২০২১ সালে স্বাক্ষরিত ইউএস, ইউকে এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ২৩৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি বড় সাবমেরিন চুক্তি ‘অকাস’ পুনর্বিবেচনার ঘোষণা দেয়। এরপর, চলতি বছরের এপ্রিলে অস্ট্রেলিয়ার সব রপ্তানি পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়। আলবানিজ সে সময় ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তকে ‘বন্ধুর কাজ নয়’ বলে মন্তব্য করেছিলেন।
লায়নস ট্রাম্পের কড়া প্রতিক্রিয়ার পর বলেন, ‘ভদ্রভাবে যৌক্তিক প্রশ্ন করা সম্পর্কের ক্ষতি করতে পারে এমন ধারণা উদ্ভট।’ তিনি বলেন, ‘আমার কাছে এটি একেবারেই স্বাভাবিক—যথাযথ গবেষণার ভিত্তিতে প্রশ্ন করা। এটি কোনো প্ররোচনামূলক প্রশ্ন ছিল না এবং আক্রমণাত্মকভাবেও করা হয়নি।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: