
আবারও কি আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা মোতায়েন হতে চলেছে? প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে এমন প্রশ্ন উঠছে। ট্রাম্প বলেছেন, আফগানিস্তানের ঐতিহাসিক বাগরাম বিমান ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে মার্কিন সেনা।
সিএনএন জানিয়েছে, তালেবানদের কাছ থেকে বাগরাম বিমান ঘাঁটির দখল নেয়ার উপায় খুঁজতে গত কয়েক মাস ধরে জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের চাপ দিচ্ছেন ট্রাম্প। তবে গত বৃহস্পতিবার সেই আলোচনা প্রকাশ্যে আনলেন তিনি।
লন্ডন সফরকালে তিনি বলেন, তার প্রশাসন বেসটি পুনরায় নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা করছে। বিমান ঘাঁটিটি কাবুলের উত্তরে অবস্থিত। তথাকথিত ‘সন্ত্রাসীবিরোধী যুদ্ধে’র নামে দীর্ঘ দুই দশকের সামরিক আগ্রাসন শেষে ২০২১ সালে আফগান সরকারের পতন ও মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর তালেবান এর দখল নেয়।
দুদিনের যুক্তরাজ্য সফরের শেষ দিন বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন ট্রাম্প। সেখানে নানা বিষয়ে কথা বলেন তিনি। এ সময় অপ্রত্যাশিতভাবেই আফগানিস্তানের প্রসঙ্গ তুলে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা এটি (তালেবানকে) দিয়েছিলাম। আমরা এটাকে এরই মধ্যে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।’
কিন্তু হঠাৎ কেন এই পরিকল্পনা? সিএনএনকে জানিয়েছে, গত মার্চ মাস থেকে ঘাঁটিটি আবারও মার্কিন নিয়ন্ত্রণে নেয়ার ব্যাপারে আলোচনা চলছে। ট্রাম্প ও তার শীর্ষ জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তারা মনে করেন, কিছু কারণে ঘাঁটিটি নিয়ন্ত্রণে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। অন্যতম কারণ হলো―চীনকে নজরদারিতে রাখা।
যা বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের কথাতেও উঠে এসেছে। তিনি বলেন, ‘চীন যেখানে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করে সেখান থেকে বাগরাম বিমান ঘাঁটি খুব কাছেই।‘ ঘাঁটিটি থেকে চীন সীমান্তের দূরত্ব ৫০০ মাইলেরও কম।
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ আফগানিস্তানের বিরল মাটির উপাদান এবং খনিজ সম্পদ। এছাড়া ‘জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস-কের মোকাবিলায় একটি সন্ত্রাসবিরোধী কেন্দ্র স্থাপন এবং নতুন করে একটি কূটনৈতিক কার্যালয় খোলা।
সিএনএন জানিয়েছে, এসব লক্ষ্য অর্জনের জন্য আফগানিস্তানে পুনরায় মার্কিন সেনা মোতায়েন করতে হবে। আর ট্রাম্প ২০২০ সালে তার প্রথম মেয়াদে তালেবানের সঙ্গে যে চুক্তি করেছিলেন, তাতে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের শর্ত ছিল।
তবে বিমান ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে তালেবান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কীভাবে আলোচনা করছে তা স্পষ্ট নয়। তবে বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের এখনও কিছু প্রভাব রয়েছে। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা এটাকে ফেরত আনার চেষ্টা করছি কারণ তাদেরও (তালেবান) আমাদের কিছু প্রয়োজন। আমরা সেই ঘাঁটিটি ফেরত চাই।’
ট্রাম্প পূর্বেও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, ২০২১ সালের মার্কিন সেনা প্রত্যাহার তার প্রশাসনের সময় ঘটলে তিনি বাগরামের নিয়ন্ত্রণ রাখতেন এবং এর কৌশলগত গুরুত্ব আফগানিস্তান-চীন সীমান্তের কাছে থাকার কথা উল্লেখ করেন। চলতি মাসের শুরুতে তিনি বলেন, ২০২১ সালে বাগরাম থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বাইডেন প্রশাসনে ‘বোকামি’ ছিল।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: