ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও গাজায় শান্তি স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের ২১ দফা পরিকল্পনা

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:২৩

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

গাজা যুদ্ধ থামাতে ও দীর্ঘমেয়াদে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে অগ্রসর হতে যুক্তরাষ্ট্র একটি ২১ দফা পরিকল্পনা তুলে ধরেছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে এই সপ্তাহে কয়েকটি আরব ও মুসলিম দেশকে প্রস্তাবটি জানানো হয়।

পরিকল্পনার মূল দিকগুলো হচ্ছে—

১. গাজাকে সন্ত্রাসমুক্ত ও প্রতিবেশীর জন্য নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

২. গাজা পুনর্গঠন করা হবে ফিলিস্তিনিদের কল্যাণে।

৩. উভয় পক্ষ সমঝোতায় এলে যুদ্ধ অবিলম্বে থামবে, ইসরায়েল ধীরে ধীরে সেনা প্রত্যাহার করবে।

৪. ইসরায়েল প্রস্তাবে সম্মত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সব জীবিত ও মৃত জিম্মিকে ফেরত দেওয়া হবে।

৫. এর বিনিময়ে ইসরায়েল কয়েক শত আজীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনি বন্দি ও হাজারের বেশি গাজাবাসীকে মুক্তি দেবে, সঙ্গে ফিরিয়ে দেবে কয়েক শত ফিলিস্তিনিদের লাশও।

৬. যারা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে অঙ্গীকার করবে, সেই হামাস সদস্যদের সাধারণ ক্ষমা দেওয়া হবে।যারা গাজা ছাড়তে চাইবে, তাদের নিরাপদে অন্য দেশে যেতে দেওয়া হবে।
৭. সমঝোতা হলে গাজায় প্রতিদিন অন্তত ৬০০ ট্রাক সাহায্য প্রবেশ করবে; অবকাঠামো পুনর্গঠন ও ধ্বংসস্তূপ সরানোর সরঞ্জাম আনা হবে।

৮. ইসরায়েল বা হামাসের হস্তক্ষেপ ছাড়াই জাতিসংঘ, রেড ক্রিসেন্ট ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ত্রাণ বিতরণ করবে।

৯. গাজা শাসন করবে অস্থায়ী ফিলিস্তিনি সরকার। এর তদারকি করবে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে গঠিত আন্তর্জাতিক কমিটি, যা আরব ও ইউরোপীয় অংশীদারদের সঙ্গে পরামর্শ করবে।

১০. কিভাবে গাজাকে আধুনিক শহরের মতো গড়ে তোলা যায় এবং বিনিয়োগ-চাকরির সুযোগ তৈরি হয় তা নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা করা হবে।

১১. বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে, যেখানে অংশীদার দেশগুলো আলোচনার মাধ্যমে শুল্ক ও প্রবেশাধিকার নির্ধারণ করবে।

১২. কাউকে জোর করে গাজা ছাড়তে বাধ্য করা হবে না। যারা ইচ্ছা যাবে, যারা ইচ্ছা থাকবে।তবে গাজাবাসীদের দেশে থেকেই ভবিষ্যৎ গড়ার আহ্বান জানানো হবে।

১৩. হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না। সামরিক অবকাঠামো ধ্বংস হবে, নতুন করে তৈরি নিষিদ্ধ থাকবে। নতুন নেতৃত্ব প্রতিবেশীর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।

১৪. আঞ্চলিক অংশীদাররা নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেবে, যাতে গাজা আর কখনো ইসরায়েলের জন্য হুমকি না হয়।

১৫. যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা একটি অস্থায়ী আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করবে। তারা গাজায় শৃঙ্খলা রক্ষা করবে ও ফিলিস্তিনি পুলিশ গড়ে তুলবে।

১৬. ইসরায়েল গাজা দখল বা সংযুক্ত করবে না। ধীরে ধীরে সেনা প্রত্যাহার করবে।

১৭. হামাস সমঝোতায় না এলেও গাজার সন্ত্রাসমুক্ত অংশগুলো আন্তর্জাতিক বাহিনীর হাতে হস্তান্তর করা হবে।

১৮. ইসরায়েল কাতারে ভবিষ্যতে আর হামলা চালাবে না। যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্ব সম্প্রদায় গাজা ইস্যুতে দোহায় কূটনৈতিক ভূমিকার স্বীকৃতি দেবে।

১৯. গাজার জনগণকে চরমপন্থা থেকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চালু হবে। এর মধ্যে থাকবে ইসরায়েল-গাজার মধ্যে আন্তধর্মীয় সংলাপ।

২০. গাজা পুনর্গঠনের অগ্রগতি ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সংস্কার সম্পন্ন হলে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ‘বিশ্বাসযোগ্য পথ’ তৈরি হতে পারে।

২১. ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের রাজনৈতিক দিগন্ত নির্ধারণে সংলাপ চালু করবে যুক্তরাষ্ট্র।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: