হামাসকে অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানালেন সেন্টকম প্রধান

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৬ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:৫০

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

গাজার বেসামরিক মানুষের ওপর সহিংসতা বন্ধ করে হামাসকে অবিলম্বে অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য কমান্ড (সেন্টকম)। আজ বুধবার এক বিবৃতিতে সেন্টকমের প্রধান কমান্ডার ব্র্যাড কুপার বলেন, হামাস যেন দেরি না করে গাজার নিরপরাধ ফিলিস্তিনি নাগরিকদের ওপর গুলি চালানো ও সহিংসতা বন্ধ করে।

ব্র্যাড কুপার আরও বলেন, ‘আমরা মধ্যস্থতাকারীদের কাছে আমাদের উদ্বেগ জানিয়েছি। তাঁরা আমাদের সঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন, যাতে শান্তিচুক্তি কার্যকর করা যায় এবং গাজার সাধারণ নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়া যায়।’

সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির পর আগামী শুক্রবার থেকে ধীরে ধীরে গাজা উপত্যকার রাস্তায় ফের তাদের সদস্যদের মোতায়েন করছে হামাস। তবে সংগঠনটি এখনো প্রকাশ্যে নিরস্ত্রীকরণ বা ক্ষমতা হস্তান্তরের কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, হামাস যোদ্ধারা আটজনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করছে। ভিডিওটিতে দেখা যায়—মারধরে আহত ও চোখ বাঁধা অবস্থায় আটজন পুরুষকে গাজার একটি রাস্তার মাঝখানে হাঁটু গেড়ে বসানো হয়েছে। এরপর তাঁদের প্রত্যেককে গুলি করে হত্যা করা হয়। বন্ধুকধারীদের সবাই হামাসের সবুজ ব্যান্ড পরিহিত ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের মুহূর্তে আশপাশের মানুষ ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি দেন।

হামাস দাবি করেছে, নিহত ব্যক্তিরা ইসরায়েলের সহযোগী ও অপরাধী ছিলেন। তবে এ-সংক্রান্ত কোনো প্রমাণ তারা প্রকাশ করেনি।

এর আগে গত সোমবার গাজা সিটিতে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ৩০ জনের বেশি ব্যক্তিকে হত্যা করেছে হামাস। তবে ওই গোষ্ঠীটির পরিচয় জানা যায়নি। হামাস দাবি করছে, অপরাধ ও নিরাপত্তাজনিত কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, কারণ যুদ্ধবিরতির পর হাজার হাজার ফিলিস্তিনি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া উত্তর গাজায় ফিরে আসছে।

সেন্টকমের কমান্ডার কুপার বলেন, হামাসকে অবিলম্বে সব ধরনের সহিংসতা বন্ধ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা মেনে চলতে হবে। তিনি হামাসকে শান্ত থেকে দ্রুত অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানান।

তবে হামাসের এই দমন অভিযানের মধ্যে ট্রাম্পের বক্তব্য কিছুটা ভিন্ন বার্তা দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, ‘হামাস কিছু গ্যাং সদস্যকে হত্যা করেছে। আমি এতে চিন্তিত নই।’

ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজার ভবিষ্যৎ প্রশাসনে হামাস থাকবে না। অঞ্চলটি নিরস্ত্রীকৃত থাকবে এবং আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে একটি ফিলিস্তিনি কমিটি প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করবে। সে সঙ্গে একটি আন্তর্জাতিক বিশেষায়িত বাহিনী পাঠানো হবে, যারা ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দেবে।

এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সেন্টকমের নেতৃত্বে ইসরায়েলে প্রায় ২০০ সেনা পাঠাতে পারে, যারা গাজাসংক্রান্ত স্থিতিশীলতা কার্যক্রমে সহায়তা করবে। তবে কোনো সেনা সরাসরি গাজায় প্রবেশ করবে না বলে জানানো হয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: