মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু : সংগৃহীত ছবি
                                    মোদির লাক্ষাদ্বীপ সফর ও মালদ্বীপকে নিয়ে মন্তব্যের পর ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে টানাপড়েন শুরু হয়েছে। ভারতের তারকা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ মালদ্বীপকে বয়কট করার ডাক দিয়েছে। এ নিয়ে এবার মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু ভারতকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘আমরা ছোট রাষ্ট্র হলেও কাউকে ধমক দেওয়ার লাইসেন্স দিইনি।’
পাঁচ দিনের চীন সফর শেষ করে দেশে ফেরার পরই নিজের অবস্থান সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করলেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহম্মদ মুইজ্জু। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা ছোট হতে পারি, এ কারণে আমাদের ধমক দিয়ে কথা বলার লাইসেন্স আপনাদের নেই।’
এক প্রতিবেদনে হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, এই মন্তব্যের মাধ্যমে মূলত ভারতকেই বিশেষ বার্তা দিল মালদ্বীপ। দুই দেশের সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যেই চীন সফরে যান মুইজ্জু।
খবরে বলা হয়েছে, চীনকে পর্যটক পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে মালদ্বীপ। সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েনে চীন জানায়, তারা মালদ্বীপে বাইরের কারও হস্তক্ষেপ সমর্থন করবে না। এই দ্বীপদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে তারা বিশ্বাস করে।
মালদ্বীপ ও চীনের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নিজেদের স্বার্থে দুই দেশ এক হয়ে কাজ করতে আগ্রহী। চীন সবসময় মালদ্বীপকে সমর্থন দেবে। এমনকি দেশটির উন্নয়ন নিয়েও চীন পাশে আছে।’
সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লাক্ষাদ্বীপ সফরের ছবি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মালদ্বীপের তিন মন্ত্রী বিতর্কিত পোস্ট করেন। সেটি ঘিরে দুই দেশের মধ্যে শুরু হয় ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক বিবাদ। বহু ভারতীয় মালদ্বীপে ভ্রমণ করা বাতিল করছেন। এসব ঘটনার মধ্যেই মুইজ্জু এমন মন্তব্য করলেন।
২০২৩ সালের নভেম্বরে ক্ষমতায় আসার পর ভারতবিরোধী বিভিন্ন বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট। ক্ষমতাগ্রহণের পরই মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনাদের ফিরে যাওয়ার উদ্যোগ নেন।
গত সপ্তাহেই মুইজ্জু রাষ্ট্রীয় সফরে চীনে যান। এই সফর শেষে দেশে ফিরে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমাদের এই মহাসাগরে বেশ কিছু ছোট ছোট দ্বীপ রয়েছে। আমাদের ৯ লাখ বর্গ কিলোমিটারের একটি বিশাল একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল আছে। এই মহাসাগরের সবচেয়ে বড় অংশের দেশগুলোর মধ্যে মালদ্বীপ অন্যতম।
এ সময় ভারতকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এই মহাসাগরটি একটি নির্দিষ্ট দেশের নয়। এই (ভারত) মহাসাগরটিও এখানে অবস্থিত সব দেশের অন্তর্ভুক্ত।
মুইজ্জু বলেন, আমরা কারও বাড়ির উঠানে নেই। আমরা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র।
এক প্রতিবেদনে আনন্দবাজার জানিয়েছে, মালদ্বীপের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এমনিতেই ‘চীনপন্থী’ বলে পরিচিত মুইজ্জু চীন সফরের পরেই ভারত সম্পর্কে অপেক্ষাকৃত নরম সুর বদলে চরম পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিলেন কি না, উঠছে সেই প্রশ্ন।
            
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: