সংগৃহীত ছবি
                                    ভারতে উত্তর প্রদেশের সাম্ভালে মুঘল যুগের শাহী জামা মসজিদে সরকারি সমীক্ষা পরিচালনাকে কেন্দ্র করে ২৪ নভেম্বর রবিবার ঘটে যাওয়া সহিংসতায় চারজন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনার পর থেকে এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত ও স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
২৪ নভেম্বর রবিবার সকালে সমীক্ষা শুরু হলে স্থানীয়দের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। মসজিদটি বর্তমানে একটি বিতর্কিত আইনি মামলার কেন্দ্রবিন্দু, যেখানে দাবি করা হয়েছে, এটি একটি হিন্দু মন্দিরের স্থানে নির্মিত।
প্রতিবাদকারীরা কয়েকটি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় ও পুলিশের দিকে পাথর নিক্ষেপ করে। পুলিশ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ও লাঠিচার্জ করে। এই ঘটনায় প্রায় ২০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন কনস্টেবলের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২১ জনকে আটক করা হয়েছে। তার মধ্যে তিনজন নারী। এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী (এনএসএ) ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাজেন্দ্র পেনসিয়া বলেছেন, দেশি বন্দুকের গুলিতে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকিদের মৃত্যুর কারণ পোস্টমর্টেমের পর জানা যাবে।
সাম্ভালে ২৪ ঘণ্টার জন্য ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। আর দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২৫ নভেম্বর ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বহিরাগত, সামাজিক সংগঠন ও জনপ্রতিনিধিদের সাম্ভালে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
স্থানীয় আদালতের নির্দেশে মসজিদে সমীক্ষা শুরু হলে গত মঙ্গলবার থেকেই সাম্ভাল উত্তপ্ত ছিল। এক পিটিশনে দাবি করা হয়েছিল যে, মসজিদের স্থানে আগে একটি মন্দির ছিল। নামাজে বাধা দেওয়া এড়াতে জরিপের সময় পরিবর্তন করে রবিবার সকালে নেওয়া হয়েছিল।
হিন্দু পক্ষের একজন আইনজীবী দাবি করেছেন, ১৫২৯ সালে মুঘল সম্রাট বাবর মন্দিরটি ধ্বংস করেছিলেন। সমর্থকরা ঐতিহাসিক সত্য উদঘাটনের সমীক্ষা পরিচালনাকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বলে মনে করেন। তবে সমালোচকরা মনে করেন, এটি ১৯৯১ সালের 'প্লেসেস অব ওয়ারশিপ অ্যাক্টের' লঙ্ঘন ও ধর্মীয় স্থানের পবিত্রতা নষ্ট করছে।
সমীক্ষা দল তাদের কাজ শেষ করেছে। ২৯ নভেম্বর আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, সরকারের সংবেদনহীন পদক্ষেপে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে ও মানুষ নিহত হয়েছে। এর জন্য বিজেপি সরকার সরাসরি দায়ী।
অন্যদিকে, বিজেপি বলেছে, আদালতের আদেশ অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক। কেউ আইন লঙ্ঘনের অধিকার রাখে না।
বিজেপি মুখপাত্র নলিন কোহলি বলেন, যারা আদালতের আদেশ নিয়ে আপত্তি করেন, তাদের আইনি পথে যাওয়া উচিত।
            
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: