সংগৃহীত ছবি
                                    
যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে নিশানা করছে বলে অভিযোগ করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। ৫ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার শাসক দলটি অভিযোগ করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ‘ডিপ স্টেট’ উপাদানগুলো তদন্তকারী সাংবাদিক ও বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে একযোগে ভারতকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
এটি একটি আশ্চর্যজনক অভিযোগ। কেননা, গত দুই দশকে দিল্লি ও ওয়াশিংটন একটি শক্তিশালী সম্পর্ক তৈরি করেছে। এছাড়া, কিছু বিষয়ে মত-পার্থক্য ও ভিন্ন অবস্থান থাকা সত্ত্বেও উভয় দেশই এই সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিজেপি বলেছে, গান্ধীর দল কংগ্রেস আদানি গ্রুপের ওপর ‘এককভাবে ফোকাস করে’ এমন অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) এর নিবন্ধগুলো ব্যবহার করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে তাদের কথিত ঘনিষ্ঠতাকে কাজে লাগিয়ে মোদিকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে।
গত মাসে, ২৬৫ বিলিয়ন ডলার প্রকল্পের অংশ হওয়ার জন্য আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি ও আরও সাতজনকে ভারতীয় কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে এই অভিযোগগুলোকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে অভিহিত করেছে আদানি গ্রুপ।
ওসিসিআরপি-এর নিবন্ধগুলোতে অভিযোগ করা হয়, ভারতে রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষক হ্যাকাররা বিরুদ্ধে সরকারের সমালোচকদের লক্ষ্যবস্তু করতে ইসরায়েলের তৈরি পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করেছে।
মোদি সরকার অবশ্য উভয় অভিযোগই অস্বীকার করেছে। এর আগে, রাহুল গান্ধী, ওসিসিআরপি ও ৯২ বছর বয়সী ধনকুবের জর্জ সোরোসের বিরুদ্ধে মোদিকে আক্রমণ করার অভিযোগ এনেছিল বিজেপি।
বৃহস্পতিবার একটি ফরাসি সংবাদমাধ্যমের বরাতে দলটি বলে, ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ও সোরোসের মতো ‘ডিপ স্টেটের অন্যান্য ব্যক্তিত্ব’র মাধ্যমে ওসিসিআরপিকে অর্থায়ন করা হয়েছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা একাধিক বার্তায় বিজেপি বলেছে, প্রধানমন্ত্রী মোদিকে নিশানা করে ভারতকে অস্থিতিশীল করা ‘ডিপ স্টেটের’ একটি স্পষ্ট উদ্দেশ্য ছিল।
এতে বলা হয়েছে, ‘এই এজেন্ডার পেছনে সবসময়ই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছিল। একটি ‘ডিপ স্টেট’ এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য একটি মিডিয়া টুল হিসেবে কাজ করেছে ওসিসিআরপি।
বৃহস্পতিবার দলের সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করেছেন বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র ও আইনপ্রণেতা সম্বিত পাত্র। তিনি বলেন, ‘একটি ফরাসি অনুসন্ধানী বার্তা সংস্থার প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে, ওসিসিআরপি-এর ৫০ শতাংশ অর্থায়ন সরাসরি আমেরিকান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আসে।
সম্বিত পাত্র বলছিলেন, ‘ওসিসিআরপি একটি গভীর রাষ্ট্রীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য একটি মিডিয়া টুল হিসেবে কাজ করেছে।’
যুক্তরারষ্ট্রের পরররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন দলের অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও সাড়া দেয়নি।
একটি বিবৃতিতে ওসিসিআরপি বলেছে, তারা একটি স্বাধীন মিডিয়া আউটলেট এবং কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা নেই।
ওসিসিআরপি’র ই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ যুক্তরাষ্ট্র সরকার ওসিসিআরপি-কে কিছু তহবিল প্রদান করলেও আমাদের সম্পাদকীয় প্রক্রিয়াগুলোতে কোনও বক্তব্য রাখে না এবং আমাদের প্রতিবেদনের ওপর তাদের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই।’
গৌতম আদানির বিরুদ্ধে আমেরিকান অভিযোগ ইস্যুতে সম্প্রতি উত্তাপের মুখে পড়েছে বিজেপি সরকার। বিরোধী নেতারা বলেন, মোদি সবসময় আদানি গ্রুপকে সুরক্ষা দিয়ে থাকেন। এই ইস্যুতে বিরোধী আইনপ্রণেতারা আলোচনার দাবি জানালে গত সপ্তাহে দেশটির পার্লামেন্ট একাধিকবার স্থগিত করা হয়।
তবে মোদির বিজেপি ও আদানি গ্রুপ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
            
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: