
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পারমাণবিক চুক্তির প্রস্তাবকে গুরুত্ব না দিলে ইরানে ইসরায়েল হামলা চালাতে পারে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে সৌদি আরব। শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত এপ্রিল মাসে সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স খালিদ বিন সালমান এই বার্তা তেহরানে পৌঁছে দেন। সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ তাঁর ছেলে প্রিন্স খালিদকে এই গোপন বার্তা নিয়ে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির কাছে পাঠান।
১৭ এপ্রিল তেহরানে প্রেসিডেন্ট ভবনে অনুষ্ঠিত রুদ্ধদ্বার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান, সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি।
চারটি সূত্র জানিয়েছে, প্রিন্স খালিদ বৈঠকে ইরানকে সতর্ক করে বলেন, ট্রাম্প দীর্ঘ আলোচনার পক্ষপাতী নন, বরং দ্রুত সিদ্ধান্ত চান। তিনি বলেন, আলোচনায় ব্যর্থতা ইসরায়েলি হামলার ঝুঁকি বাড়াবে। ফলে দ্রুত চুক্তিতে পৌঁছানোই উত্তম হবে।
উপসাগরীয় সূত্রগুলো আরও জানায়, সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, গাজা ও লেবাননে চলমান সংঘাতে অঞ্চল ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত, আর নতুন করে উত্তেজনা এই অঞ্চলের জন্য সহনীয় হবে না।
প্রসঙ্গত, এটি ছিল দুই দশকের মধ্যে কোনো শীর্ষ সৌদি রাজপুত্রের প্রথম ইরান সফর। রিয়াদ ও তেহরানের দীর্ঘদিনের বৈরিতা ২০২৩ সালে চীনের মধ্যস্থতায় কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের মাধ্যমে খানিকটা প্রশমিত হয়।
রয়টার্সের অনুসন্ধানের বিষয়ে সৌদি ও ইরান সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ইরান-আমেরিকা দ্বন্দ্ব চলছে। আমেরিকা বলে আসছে, ইরান যাতে পরমাণু অস্ত্র বানানোর দিকে না আগায়। তবে ইরান বলছে, এমন দাবি যৌক্তিক নয়। তারা যে পরমাণু কর্মসূচি চালাচ্ছে, তা শান্তির জন্যই। সম্প্রতি ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইরান ছাড় দিয়েছে। দুই দেশ এখন চুক্তির প্রায় কাছাকাছি পর্যায়ে রয়েছে।
ইরান চায়, তার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার করা হোক। বিনিময়ে তারা কিছু পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত করতে পারে। তবে পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের অধিকার বজায় থাকবে।
এই পরিস্থিতি এমন একসময়ে সৃষ্টি হয়েছে, যখন ইরান ও পশ্চিমা শক্তিগুলোর মধ্যে পারমাণবিক আলোচনায় দীর্ঘদিন ধরে অচলাবস্থা চলছে। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায়। এখন দুই পক্ষই নতুন শর্তে তা পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: