
বিশ্ব পর্যটন খাতে দিন দিন বাড়ছে মুসলিম ভ্রমণকারীর সংখ্যা। তাদের চাহিদার প্রতি বাড়তি মনোযোগ এবং সচেতনতার ফলে বদলে যাচ্ছে বিশ্ব পর্যটনের নকশা। মাস্টারকার্ড-ক্রিসেন্ট রেটিং গ্লোবাল মুসলিম ট্রাভেল ইনডেক্স ২০২৫-এ বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্বজুড়ে মুসলিম পর্যটকের সংখ্যা ১৭৬ মিলিয়নে পৌঁছেছিল। সে সংখ্যা ২০২৩ সালের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি।
সম্প্রতি ১০টি অমুসলিম এবং ১০টি মুসলিম দেশ নিয়ে গ্লোবাল মুসলিম ট্রাভেল ইনডেক্স ২০২৫ সালের ‘টপ মুসলিম-ফ্রেন্ডলি ডেস্টিনেশন অব দ্য ইয়ার’ তালিকা প্রকাশ করেছে। এ উপলক্ষে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত চতুর্থ হালাল ইন ট্রাভেল অ্যাওয়ার্ডস আয়োজিত হয়।
গ্লোবাল মুসলিম ট্রাভেল ইনডেক্স ২০২৫ অনুযায়ী, টানা কয়েক বছর সেরা মুসলিমবান্ধব অমুসলিম ভ্রমণ গন্তব্য হিসেবে শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে সিঙ্গাপুর। এ বছর দেশটি পেয়েছে ৭১ পয়েন্ট, যা ২০২৪ সালের তুলনায় ৫ পয়েন্ট বেশি।
এ বছর প্রথমবারের মতো শীর্ষ ২০-এ জায়গা করে নিয়েছে রাশিয়া ও কানাডা। এসব দেশ ছাড়া নিউজিল্যান্ড, ম্যাকাও, তানজানিয়া, কেনিয়া-এই চার দেশও তালিকায় যুক্ত হয়েছে।
গ্লোবাল মুসলিম ট্রাভেল ইনডেক্স প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ৬০ বছরের বেশি বয়সী মুসলিম পর্যটকেরা এখন বিশ্ব ভ্রমণ ব্যয়ের প্রায় ১৫ শতাংশ খরচ করছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে এ খাতে তাঁদের খরচের পরিমাণ পৌঁছাবে প্রায় ২.৬৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এই বয়সের পর্যটকেরা সাধারণত অফ সিজনে ভ্রমণ পছন্দ করেন এবং দীর্ঘ সময় নিয়ে স্বচ্ছন্দে বেড়াতে যান। তাঁরা তুলনামূলকভাবে বেশি খরচ করতেও প্রস্তুত। তাই পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীদের জন্য এই গ্রুপ হতে পারে একটি লাভজনক সুযোগ।
তালিকায় থাকা দেশগুলো নামাজের ব্যবস্থা এবং ধর্ম-সচেতন সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে উন্নতি করায় মুসলিম ভ্রমণকারী মানুষের কাছে আরও আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হচ্ছে। গ্লোবাল মুসলিম ট্রাভেল ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী, অমুসলিম দেশগুলো এখন হালাল সার্টিফায়েড রেস্তোরাঁ, নামাজের স্থান এবং ধর্ম-সংস্কৃতি সম্পর্কে সচেতন আতিথেয়তা খাতে প্রশিক্ষিত কর্মী গড়ে তোলার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে।
‘টপ মুসলিম-ফ্রেন্ডলি ডেস্টিনেশন অব দ্য ইয়ার’ তালিকায় শীর্ষ ১০ অমুসলিম দেশ হলো:
১. সিঙ্গাপুর
২. যুক্তরাজ্য
৩. হংকং
৪. তাইওয়ান
৫. থাইল্যান্ড
৬. আয়ারল্যান্ড
৭. অস্ট্রেলিয়া
৮. ফিলিপাইনস
৯. স্পেন
১০. জার্মানি
বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে মুসলিম পর্যটকদের সংখ্যা ২৪৫ মিলিয়নে পৌঁছাবে এবং ভ্রমণ ব্যয় হবে প্রায় ২৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তাই পর্যটন খাতের জন্য এটি একটি বিশাল সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: