
টানা চার দিনের সংঘাতের পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দুই প্রতিবেশী, সিরিয়া ও ইসরায়েল । সংঘাতে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩২১ জন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তুরস্কে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত টম বারাক।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় বারাক জানান, তুরস্ক, জর্ডানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর আহ্বানে সাড়া দিয়ে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে দুই দেশ। একই সঙ্গে তিনি সিরিয়ার সব দ্রুজ, বেদুইন ও সুন্নিদের অস্ত্র ফেলে ‘নতুন সিরিয়া’ গঠনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
তবে এই ঘোষণা নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য আসেনি ওয়াশিংটনের ইসরায়েলি দূতাবাস বা কানাডার সিরীয় কনস্যুলেট থেকে।
বিভেদ শুরু হয় গত মঙ্গলবার সিরিয়ার সোয়েইদায় এক পারিবারিক অনুষ্ঠানে বন্দুকধারীদের হামলার পর। এতে প্রাণ হারান ১৩ জন। হামলাকারীদের সবাই ছিল সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারার নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক জোট ‘এইচটিএস’-এর সদস্য, যারা কট্টর সুন্নি মতাদর্শে বিশ্বাসী।
হামলার পরদিন ইসরায়েল পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানায়। তারা দামেস্ক ও সোয়েইদায় সিরিয়ার সামরিক ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালায়। ইসরায়েল জানায়, সংখ্যালঘু দ্রুজ সম্প্রদায়কে রক্ষা করতেই তারা এ পদক্ষেপ নিয়েছে।
এর আগে সোয়েইদায় কয়েক দিন ধরে দ্রুজ, বেদুইন ও সুন্নি মুসলিম এই তিনটি সম্প্রদায়ের মধ্যে চলছিল রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী পাঠালেও সংঘাত আরও বেড়ে যায়। এরপরই ইসরায়েলের হামলা শুরু হয়।
মানবিক দিক থেকেও সোয়েইদার অবস্থা ভয়াবহ। এলাকায় খাদ্য, পানি, বিদ্যুৎ, মোবাইল নেটওয়ার্ক সবই বন্ধ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, চরম সংকটে দিন কাটাচ্ছেন তারা।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে ২৮ বছর বয়সী স্থানীয় যুবক মুদার বলেন, ‘গত চার দিনে আমাদের কাছে খাবার, পানি, বিদ্যুৎ কিছুই নেই। সোয়েইদা এখন মৃত্যুপুরী হয়ে গেছে।’
দ্রুজ সম্প্রদায় সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য তথ্য হলো, তারা ইসলামের শিয়া শাখার একটি বিশেষ মতাদর্শ অনুসরণ করে। নবম শতকে সুফি সাধক ইসমাইল নাশতাকিন আদ-দারাজি এই মতবাদের সূচনা করেন। তারা আল্লাহ, হজরত মুহাম্মদ (সা.) এবং চার খলিফার প্রতি বিশ্বাস রাখেন, তবে তারা আরও বিশ্বাস করেন যে মানুষের মধ্যেই সৃষ্টিকর্তা বিরাজমান।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: