
দক্ষিণ কোরিয়ার সেনা সংখ্যা গত ছয় বছরে ২০ শতাংশ কমে সাড়ে চার লাখে নেমে এসেছে। এর নেপথ্যে প্রাথমিকভাবে রয়েছে দেশটিতে বিশ্বের সর্বনিম্ন জন্মহারের কারণে সামরিক বাহিনীতে বাধ্যতামূলক যোগদানের উপযুক্ত বয়সী পুরুষ জনসংখ্যা কমে আসা। রবিবার (১০ আগস্ট) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সেনা সার্ভিস উপযোগী পুরুষের সংখ্যা কমে আসার অফিসার শ্রেণিও সংকুচিত হয়ে আসছে যা অব্যাহত থাকলে অপারেশনাল জটিলতা তৈরি হতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় তরুণ পুরুষদের জন্য সেনাবাহিনীতে ১৮ মাসের সেবা প্রদান বাধ্যতামূলক। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত ছয় বছরে ২০ বছর বয়সী পুরুষের সংখ্যা ২০ শতাংশ কমে দুলাখ ৩০ হাজারে নেমে আসে। এ বয়সীরাই বাধ্যতামূলক যোগদানের জন্য শারীরিক পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি অংশগ্রহণ করে থাকে।
চলতি শতাব্দীর শুরু থেকেই দেশটিতে সেনাবাহিনীর আকার ছোট হয়ে আসছে। সে সময় তাদের প্রায় ছয় লাখ ৯০ হাজার সেনাসদস্য ছিল। বিগত দশকে এই হ্রাসের গতি ত্বরান্বিত হয় এবং ২০১৯ সাল নাগাদ সক্রিয় সেনা ও অফিসার সংখ্যা নেমে আসে পাঁচ লাখ ৬৩ হাজার জনে।
সেনা সদস্য কমে আসা নিয়ে দেশটির দুশ্চিন্তার প্রধান কারণ হলো, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০২২ সালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, পিয়ংইয়ংয়ের সেনাবাহিনীতে প্রায় ১২ লাখ সদস্য রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার চলতি বছরের প্রতিরক্ষা বাজেটের আকার প্রায় চার হাজার ৩৯০ কোটি মার্কিন ডলার, যা উত্তর কোরিয়ার সম্ভাব্য রাষ্ট্রীয় বাজেটের চেয়েও বেশি। অথচ প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির জন্য তাদের ৫০ হাজার সদস্য ঘাটতি রয়েছে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এই ঘাটতির ২১ হাজার আবার রয়েছে নন-কমিশনড অফিসার শ্রেণিতে।
বিশ্বের দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া দেশের একটি হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। ২০২৪ সালে তাদের জন্মহার নেমে আসে শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশে। ২০২০ সালে দেশটির জনসংখ্যা ৫ কোটি ১৮ লাখে পৌঁছানো। সরকারি পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৭২ সালে সংখ্যাটি কমে দাঁড়াবে ৩ কোটি ৬২ লাখ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: