
সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা আগামী সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে (ইউএনজিএ) ভাষণ দেবেন। কয়েক দশক পর কোনো সিরীয় নেতা এই মঞ্চে ভাষণ দিতে যাচ্ছেন। দীর্ঘ ১৪ বছরের বিধ্বংসী গৃহযুদ্ধ এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়া এখন নতুন করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সম্পৃক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে।
গত ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে আসাদ পরিবার সিরিয়া শাসন করেছে। কিন্তু না হাফেজ আল-আসাদ, না তার ছেলে বাশার—কেউই নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক সম্মেলনে ভাষণ দেননি।
একজন সিরীয় কর্মকর্তা সোমবার জানান, তিনি (আল-শারা) হবেন প্রথম সিরীয় প্রেসিডেন্ট, যিনি জাতিসংঘে ভাষণ দেবেন সাবেক প্রেসিডেন্ট নুরেদ্দিন আল-আতাসির পর (১৯৬৭ সালে)। আর এটি হবে প্রথমবার, কোনো সিরীয় প্রেসিডেন্ট জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের উচ্চপর্যায়ের সপ্তাহে অংশ নিচ্ছেন।
গত ডিসেম্বরে দামেস্কে বিদ্রোহীদের হঠাৎ অগ্রযাত্রার মাধ্যমে আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতায় আসেন আল-শারা। তবে তিনি এখনো জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আছেন। তাই বিদেশ সফরের জন্য তাকে বিশেষ ছাড়পত্র নিতে হচ্ছে।
এপ্রিল মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আল-শায়বানি জাতিসংঘে ভাষণ দেন এবং সংস্থার নিউইয়র্ক সদরদফতরে সিরিয়ার নতুন পতাকা উত্তোলন করেন।
নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর সিরিয়া কূটনৈতিক ও আর্থিক উভয় ক্ষেত্রেই আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সমর্থন অর্জন করেছে। দেশ পুনর্গঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সহায়তাও পাচ্ছে।
এই মাসেই দামেস্ক ১২টি চুক্তি সই করেছে, যার মোট মূল্য ১৪ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে রয়েছে কাতারের ইউসিসি হোল্ডিংয়ের সঙ্গে ৪ বিলিয়ন ডলারের নতুন বিমানবন্দর নির্মাণ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাতীয় বিনিয়োগ সংস্থার সঙ্গে ২ বিলিয়ন ডলারের মেট্রো প্রকল্প।
মে মাসে আল-শারা সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর এক সপ্তাহ আগে তিনি প্রথমবারের মতো পশ্চিমা কোনো সফরে গিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এরই মধ্যে সিরিয়ার ওপর থেকে দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে।
আগামী সেপ্টেম্বরে সিরিয়ায় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ অধিবেশনের এক সপ্তাহ আগে। এটাই হবে আসাদের পতনের পর নতুন কর্তৃপক্ষের অধীনে প্রথম নির্বাচন। ২১০ আসনের এক-তৃতীয়াংশ সরাসরি নিয়োগ দেবেন অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আল-শারা, বাকি আসনগুলো নির্বাচন করে পূরণ করা হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: