যুক্তরাষ্ট্রের ভিসাধারী কোনো চীনা নাগরিক মহাকাশ কর্মসূচিতে কাজ করতে পারবে না : নাসা

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:০০

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা সংস্থাটির বিভিন্ন কর্মসূচিতে বৈধ ভিসা থাকা সত্ত্বেও চীনা নাগরিকদের কাজ করা থেকে বিরত রাখছে।

এই ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে তীব্র হয়ে ওঠা মহাকাশ প্রতিযোগিতা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

নীতিগত এই পরিবর্তনের খবরটি প্রথম প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ নিউজ এবং পরে সরকারি সংস্থা নাসা বিষয়টি নিশ্চিত করে।

বুধবার নাসার প্রেস সেক্রেটারি বেথানি স্টিভেন্স বলেন, “নাসা চীনা নাগরিকদের বিষয়ে অভ্যন্তরীণ পদক্ষেপ নিয়েছে। আমাদের কাজের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা তাদের জন্য আমাদের বিভিন্ন স্থাপনা, সরঞ্জাম ও নেটওয়ার্কে প্রবেশাধিকার সীমিত করেছি।”

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এর আগে চীনা নাগরিকরা নাসার কর্মী হিসেবে না হলেও ঠিকাদার বা শিক্ষার্থী হিসেবে গবেষণা কাজে অংশ নিতে পারতেন।

কিন্তু ৫ সেপ্টেম্বর বেশ কয়েকজন চীনা ব্যক্তি নিজেদের পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে জানান, হঠাৎ করেই আইটি সিস্টেমে তাদের প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং ব্যক্তিগত সাক্ষাতেও তাদের যেতে নিষেধ করা হয়।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে চীন-বিরোধী মনোভাব বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন— উভয়ই চাঁদে নভোচারী পাঠানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘অ্যাপোলো’ কর্মসূচির (১৯৬৯-১৯৭২) ধারাবাহিকতায় ‘আর্টেমিস’ কর্মসূচির মাধ্যমে ২০২৭ সালের মধ্যে চাঁদে নভোচারী পাঠানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এই কর্মসূচিতে বাজেট বৃদ্ধি ও সময়ক্ষেপণের মতো সমস্যা দেখা দিয়েছে।

অন্যদিকে, চীন ২০৩০ সালের মধ্যে তাদের ‘তাইকোনট’দের (চীনা নভোচারী) চাঁদে পাঠানোর লক্ষ্য নিয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে তারা তাদের নির্ধারিত সময়সীমা পূরণে বেশ সফল হয়েছে।

নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক সিন ডাফি বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গল গ্রহে রোভারের সাম্প্রতিক আবিষ্কার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেন, “আমরা এখন দ্বিতীয় মহাকাশ প্রতিযোগিতার মধ্যে আছি।”

তিনি আরও বলেন, “চীন আমাদের আগে চাঁদে ফিরে যেতে চায়। সেটা হতে দেব না। যুক্তরাষ্ট্র অতীতে মহাকাশ গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও দেবে।”

মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টাও করছে চীন। এ লক্ষ্যে ২০২৮ সালে একটি রোবট মিশন পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের, যা দ্রুততম সময়ে ২০৩১ সালের মধ্যে নমুনা নিয়ে ফিরতে পারে।

এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন তাদের বাজেট প্রস্তাবনায় ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির সঙ্গে যৌথভাবে পরিকল্পিত ‘মার্স স্যাম্পল রিটার্ন মিশন’ প্রকল্পটি বাতিল করার ইঙ্গিত দিয়েছে।

তারা জানিয়েছে, এই কাজটি নভোচারী-চালিত মিশনের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যেতে পারে, যদিও এ বিষয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট তথ্য এখনো দেওয়া হয়নি।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: