ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে পর্তুগাল, ফ্রান্সও দিতে যাচ্ছে শিগগিরই

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:১৪

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার পর এবার ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিল পর্তুগাল। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের আগে নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাওলো রাঞ্জেল এ ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, “ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া পর্তুগিজ পররাষ্ট্রনীতির একটি মৌলিক, ধারাবাহিক এবং অপরিহার্য অংশ। আমরা বিশ্বাস করি, দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানই মধ্যপ্রাচ্যে একটি স্থায়ী ও ন্যায্য শান্তির একমাত্র পথ।”

রাঞ্জেল আরও বলেন, পর্তুগাল অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায় এবং স্পষ্ট করে দেয় যে, গাজায় হামাসের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। একইসঙ্গে, তিনি দ্রুত সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার দাবিও জানান।

তিনি গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয়, ধ্বংসযজ্ঞ এবং পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের বসতি সম্প্রসারণের তীব্র সমালোচনা করেন। রাঞ্জেল বলেন, “ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার অর্থ এই নয় যে, গাজায় চলমান মানবিক সংকটকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। বরং এটি সংকট সমাধানের জন্য একটি নৈতিক ও রাজনৈতিক দায়িত্ব।”

পর্তুগালের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনি নেতৃবৃন্দ। ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শটাইয়ে এই স্বীকৃতিকে “একটি কূটনৈতিক বিজয়” হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এটি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফল।

একজন জ্যেষ্ঠ ফিলিস্তিনি নেতা একে “গাজাবাসীর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার পথে একটি ঐতিহাসিক মোড়” বলে উল্লেখ করেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, “ফিলিস্তিন রাষ্ট্র কখনোই গঠিত হবে না। যারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে, তারা আসলে সন্ত্রাসবাদকে বড় ধরনের পুরস্কার দিচ্ছে। আমরা এমনটি হতে দেব না।”

এই প্রেক্ষাপটে, ফ্রান্সও শিগগিরই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

ইতোমধ্যে ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশ এ বিষয়ে ইতিবাচক অবস্থান নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে বিশ্ব নেতারা জড়ো হচ্ছেন। এই অধিবেশনে গাজা যুদ্ধের অবসানে ও দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের পথে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার ইসরায়েলের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশোধ হিসেবে পশ্চিম তীরের কিছু অংশ দখলের পরিকল্পনা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইউরোপীয় দেশগুলোর এই নতুন অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের পথকে আরও জোরালো করতে পারে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: