
স্পেন ইসরায়েলের সঙ্গে তৃতীয় আরেকটি অস্ত্র চুক্তি বাতিল করেছে। ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাতিল হওয়া এই চুক্তির মূল্য ছিল ২০ কোটি ৭০ লাখ ইউরো। বিষয়টি এমন এক সময়ে এল, যখন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গাজায় গণহত্যা চালানো দেশ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
গত মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে পূর্ণ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা অনুমোদন করে স্পেন। এর ফলে ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, প্রযুক্তি এবং সংশ্লিষ্ট পণ্যের রপ্তানি ও আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। অর্থমন্ত্রী কার্লোস কুয়ের্পো মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত বড় ধরনের অগ্রগতি। এটি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি অগ্রণী আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ।’
চলতি মাসের শুরুতে প্রায় ৭০ কোটি ইউরোর একটি চুক্তি বাতিল করে মাদ্রিদ। সেই চুক্তির আওতায় ইসরায়েলি নকশায় তৈরি রকেট লঞ্চার কেনার কথা ছিল। স্পেন নিশ্চিত করেছে, ইসরায়েলের সঙ্গে অস্ত্র চুক্তি নিষিদ্ধ করার ব্যাপক সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার বিরুদ্ধে চাপ বাড়াতেই এসব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছেন, গাজায় গণহত্যা শেষ করতে নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলের সঙ্গে প্রতিরক্ষা খাতে চুক্তি নিষিদ্ধ করার বিদ্যমান সিদ্ধান্তকে আইনগতভাবে আরও শক্তিশালী করা।
তার আগে, গত ৯ সেপ্টেম্বর সরকার ১৬৮টি অ্যান্টি-ট্যাংক মিসাইল লঞ্চারের চুক্তিও বাতিল করে। এই অস্ত্রগুলো স্পেনেই তৈরি হওয়ার কথা ছিল, তবে ইসরায়েলি লাইসেন্সে। চুক্তিটির মূল্য ছিল ২৮ কোটি ৭৫ লাখ ইউরো।
কিছুদিন আগে পেদ্রো সানচেজ বৈশ্বিক ক্রীড়া সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানান ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতাগুলোতে নিষিদ্ধ করতে। সানচেজ তাঁর দলের এক সভায় বলেন, গাজায় ইসরায়েলি হামলা চালিয়ে যাওয়ার মধ্যে দেশটির বৈশ্বিক ক্রীড়া আসরে অংশ নেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘ক্রীড়া সংস্থাগুলো কি ভেবে দেখবে না, ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় রাখাটা নৈতিক কি না? ইউক্রেন আক্রমণের পর রাশিয়াকে বহিষ্কার করা হলো আর গাজা আক্রমণের পর কেন ইসরায়েলকে বহিষ্কার করা হবে না? এই বর্বরতা চলা পর্যন্ত রাশিয়া ও ইসরায়েল—কোনো দেশেরই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় থাকা উচিত নয়।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: