যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান সুদানের, আরএসএফ'কে 'নির্মূল' করতে সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৫ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:৫৭

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

দীর্ঘদিন ধরে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে জর্জরিত সুদানের সেনাবাহিনী যুদ্ধবিরতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। সেনাবাহিনী বলেছে, তারা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেশের পশ্চিমাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফ'কে 'নির্মূল' করতে পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামবে

দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের সভাপতিত্বে সামরিক প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বৈঠক শেষে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী হাসান কাবরুন বলেন, 'শান্তি অর্জনের জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের প্রচেষ্টা এবং প্রস্তাবনার জন্য আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাই।'

তিনি বলেন, 'সুদানের জনগণের লড়াইয়ের প্রস্তুতি চলছে। যুদ্ধের জন্য আমাদের প্রস্তুতি একটি বৈধ জাতীয় অধিকার।'

সেনাবাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের কোনো বিবরণ জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট সাংবাদিকদের বলেন, ওয়াশিংটন 'এই সংঘাতের শান্তিপূর্ণ অবসান দেখতে চায়, ঠিক যেমনটি আমরা অন্য অনেকের সঙ্গে করেছি। কিন্তু বাস্তবতা হলো বর্তমানে (সুদানের) মাটিতে পরিস্থিতি খুবই জটিল।'

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মিশর, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে একটি শান্তি চুক্তি অর্জনে 'সক্রিয়ভাবে জড়িত' রয়েছে।

 

কেন এই দীর্ঘ সংঘাত

আফ্রিকার হর্নে অবস্থিত সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের দেশটি ২০১৯ সালে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের পতনের পর থেকে সংঘাত এবং বিদেশি হস্তক্ষেপের চক্রে আটকা পড়েছে।

সুদানের একজন বিশ্লেষক বলেছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইসরায়েল সুদানের সংঘাতে গভীরভাবে জড়িত। তার মতে, দেশটিতে বিদেশি হস্তক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো, সোনার খনির ওপর নিয়ন্ত্রণ এবং 'আরবীকরণ' এজেন্ডা।

বছরের পর বছর ধরে চলা জনসাধারণের অস্থিরতা এবং অভ্যন্তরীণ চাপের পর ওমর আল-বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করা হলে অস্থিরতার এক নতুন যুগের সূচনা হয়।

সুদানি সেনাবাহিনী এবং র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এক সময় আল-বশিরের শাসনব্যবস্থার পতনে মিত্র হিসেবে কাজ করেছিল। এরপর দুই বাহিনীর ক্ষমতার লড়াই ২০২৩ সালের এপ্রিলে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধে রূপ নেয়। এই দ্বন্দ্ব জাতিকে পতনের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দেয়।

চলমান সংঘাতে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি এবং লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ইতোমধ্যেই ভয়াবহ মানবিক সংকট আরও গভীর হয়েছে। এরই মাঝে আল-ফাশার শহরে আরএসএফ-এর সাম্প্রতিক হামলায় শত শত বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার পর বিষয়গুলো বিশ্বব্যাপী আলোচনার তুঙ্গে রয়েছে।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: