টাইফুন 'ফাং ওয়াং' আঘাত হানার আগেই উপকূল থেকে সরানো হলো প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৯ নভেম্বর ২০২৫ ২০:১৯

ছবি : সংগৃহীত ছবি : সংগৃহীত

ফিলিপাইন সাগরে সৃষ্ট টাইফুন ফাং ওয়াং প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। আজ রোববার গভীর রাতে ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে। ঘূর্ণিঝড় এগিয়ে আসতে থাকায় দেশটির পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলীয় বিভিন্ন এলাকা থেকে দশ লাখের বেশি মানুষকে এরই মধ্যে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। 

এর আগে আরেকটি শক্তিশালী টাইফুন ‘কালমায়েগি’তে ফিলিপাইনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। মৃত্যু হয় অন্তত ২০৪ জনের, নিখোঁজ হন ১০৯ জন। গত শুক্রবারের ঘূর্ণিঝড়টিতে ভিয়েতনামেও পাঁচজন মারা যান।

ফিলিপাইনের বায়ুমণ্ডলীয়, ভূ-ভৌতিক ও জ্যোতির্বিজ্ঞান পরিষেবা প্রশাসন (পিএজিএএসএ) জানিয়েছে, স্থানীয়ভাবে উওয়ান নামে পরিচিত ‘ফাং ওয়াং’ আজ রোববার রাতের প্রথম দিকে অরোরা প্রদেশে স্থলভাগে আঘাত হানবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার (প্রতি ঘণ্টায় ১১৫ মাইল) ও ২৩০ কিলোমিটার (১৪৩ মাইল) পর্যন্ত দমকা হাওয়া বয়ে যাবে।

ঘূর্ণিছড়টি কাতানদুয়ানেস, ক্যামারিনেস সুর ও অরোরা প্রদেশসহ দক্ষিণ-পূর্ব এবং কেন্দ্রীয় অঞ্চলের জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা সংকেত নম্বর ৫ দেখাতে বলেছে। এ সময় ম্যানিলা শহর ও কাছাকাছি প্রদেশগুলোতে সংকেত ৩ নম্বর দেওয়া হয়েছিল।

ফিলিপাইনের আবহাওয়া অফিস বলছে, ছোট দ্বীপ এলাকা কাতানদুয়ানেসে ঘূর্ণিঝড়টি সরাসরি আঘাত হানতে পারে। এটির প্রভাবে আজ ভোর থেকেই সেখানে ব্যাপক বৃষ্টি হচ্ছে। বয়ে যাচ্ছে ঝোড়ো বাতাস। উপকূলীয় সড়কগুলোতে সমুদ্রের ঢেউ প্রবলভাবে ধাক্কা দিচ্ছে।

কাতানদুয়ানেসের ভিরাক শহরের ৩৩ বছর বয়সী বাসিন্দা এডসন কাসারিনো এএফপিকে বলেন, ‘সকাল সাতটার দিকে ঢেউগুলো গর্জন শুরু করল। ঢেউ যখন সমুদ্রের তীরে ধাক্কা খাচ্ছিল, মনে হচ্ছিল মাটি কাঁপছে। এখন অনেক বৃষ্টি হচ্ছে, আর আমি বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ শুনতে পাচ্ছি।’

গতকাল শনিবার এই দ্বীপের কিছু বাসিন্দাকে ঘরের চাল মজবুত করার চেষ্টা করতে দেখা যায়। স্থানীয় উদ্ধার তৎপরতা বিভাগের কর্মকর্তা রবার্টো মন্টেরোলা এএফপিকে বলেন, ‘বাসিন্দারা আমাদের ঐতিহ্য অনুসারে বড় দড়ি দিয়ে চালগুলো বেঁধে তা মাটিতে আঁকড়ে ধরে রাখার পদ্ধতি ব্যবহার করছেন; যেন বাতাসে উড়ে না যায়।’

ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় দ্বীপ লুজনের সোরসোগন শহরে কিছু মানুষ একটি গির্জায় আশ্রয় নিয়েছেন।

উপকূলীয় অরোরা প্রদেশে উদ্ধারকারী দলগুলো বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাসিন্দাদের উঁচু জায়গায় চলে যেতে বলছেন। আজ রোববার গভীর রাতে কিংবা আগামীকাল সোমবার ভোরের দিকে ঘূর্ণিঝড়টি সেখানে আঘাত হানতে পারে।

ফিলিপাইনের আবহাওয়াবিদ বেনিসন এস্তারেজা গতকাল সাংবাদিকদের বলেছেন, টাইফুনের কারণে ২০০ মিলিমিটার (প্রায় ৮ ইঞ্চি) বা এর বেশি বৃষ্টি হতে পারে। এতে ব্যাপক বন্যা দেখা দিতে পারে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: