
ইরানে হামলা চালাতে বছরের পর বছর প্রস্তুতি নেয় ইসরায়েল। এজন্য প্রস্তুতিতে তারা অস্ত্র চোরাচালানের মাধ্যমে ইরানের রাজধানী তেহরানের কাছেই তাদের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের একটি গোপন ড্রোন ঘাঁটি স্থাপন করে। অনলাইন ডেইলি মেইল বলছে, ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ), মোসাদ এবং প্রতিরক্ষা খাতের সমন্বয়ে এই পরিকল্পনা গড়ে ওঠে।
মোসাদের বিশেষ বাহিনী ইরানে প্রবেশ করে সেখানে বিশেষ অস্ত্রের মাধ্যমে ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে অকার্যকর করে তোলে। তারা ইরানের ভূমি থেকে আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যাটারিগুলোর কাছে অত্যাধুনিক অস্ত্র স্থাপন করে। শুক্রবার ভোরে সেগুলো চালু করে ইসরায়েলি বিমান হামলার পথ পরিষ্কার করে। এছাড়া মোসাদ বিভিন্ন শহরে বেসামরিক গাড়িতে বিস্ফোরক বসিয়ে রাখে। এগুলো নির্দিষ্ট সময়ে বিস্ফোরিত হয় এবং ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেয়।
গোপনে একটি ড্রোন ঘাঁটি তৈরি করা হয় তেহরানের কাছে। সেখান থেকে বিস্ফোরকযুক্ত ড্রোন উৎক্ষেপণ করে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আঘাত হানা হয়। ইসরায়েলের দাবি, তাদের যুদ্ধবিমানগুলো নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে গভীর ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণ কেন্দ্রের ওপর আঘাত হানে। নাতাঞ্জ কেন্দ্র প্রায় ২২ মিটার মাটির নিচে এবং ২.৫ মিটার কংক্রিট দিয়ে সুরক্ষিত হলেও, ইসরায়েলি ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা তা ভেদ করে ভিতরে বিস্ফোরণ ঘটায়।
ইসরায়েলি সামরিক বিবৃতিতে জানানো হয়, এই ভূগর্ভস্থ এলাকায় বহুস্তর বিশিষ্ট ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণ হল, বৈদ্যুতিক ঘর এবং অন্যান্য সহায়ক অবকাঠামো ছিল। এগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা জানায়, নাতাঞ্জ কেন্দ্রে কিছু ক্ষয়ক্ষতি হলেও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি এবং তেজস্ক্রিয়তার মাত্রাও বাড়েনি।
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাও এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। শুক্রবার দিনের বেলা নতুন করে আরও হামলার খবর পাওয়া গেছে শিরাজ, কেরমানশাহ এবং তাবরিজ প্রদেশে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, প্রথম দফায় তারা ৩৩০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা ফেলেছে। কিছু ভিডিওতে দেখা যায়, ইসরায়েলি ড্রোন ইরানের গাড়ি ও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণস্থল লক্ষ্য করে আঘাত হানছে।
ইসরায়েলি বাহিনীর মতে, এই হামলায় ‘ডজন ডজন’ রাডার ও মিসাইল লঞ্চার ধ্বংস হয়েছে। তবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েল বেসামরিক এলাকাগুলোতে হামলা চালিয়েছে। তেহরানে নারীদের ও শিশুসহ বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইরানি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: