
বহুল আলোচিত জুলাই জাতীয় সনদ–২০২৫ এর চূড়ান্ত খসড়া রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দীর্ঘ আলোচনা-সমালোচনার পর প্রস্তুত হওয়া এই সনদে রয়েছে ৮৪টি প্রস্তাব ও ৮ দফা অঙ্গীকারনামা, যেখানে জাতীয় সংসদ ও সরকার কাঠামো নিয়ে ব্যাপক সংস্কারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
খসড়ায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের প্রধান হতে পারবেন না। পাশাপাশি, কেউ ১০ বছরের বেশি সময় ধরে প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকতে পারবেন না। সনদে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের সুপারিশও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের তৈরি এই খসড়ায় সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন সংক্রান্ত সংস্কারকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কমিশনের দাবি, এসব বিষয়ে ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গড়ে উঠেছে।
সনদের পটভূমিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে যে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখা হয়েছিল, দীর্ঘ ৫৩ বছরেও তা পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হয়নি।
এতে অভিযোগ আনা হয়েছে যে, গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে বিকৃতি ঘটিয়েছে, নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে এবং দুর্নীতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠনের পথ সুগম করেছে।
জুলাই জাতীয় সনদকে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দলিল হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে, যা ভবিষ্যতের সংস্কার ও রাষ্ট্র পরিচালনার ভিত্তি হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: