আমিরাতের নভোচারী সুলতান আল-নিয়াদি
                                    
মহাকাশে আগামী রমজান মাস ও ঈদ কাটাবেন আমিরাতের নভোচারী সুলতান আল-নিয়াদি। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি আমিরাতের নিয়াদি, নাসার স্টিফেন বোয়েন, ওয়ারেন হোবার্গ, রাশিয়ার আন্দ্রে ফেডিয়ায়েভসহ ছয় সদস্যের একটি দল আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের (আইএসএস) উদ্দেশে স্পেসএক্স ফ্যালকন-৯ রকেটে যাত্রা শুরু করবে। সেখানে তাঁরা ছয় মাস অবস্থান করবেন। গত বুধবার (২৭ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।
ইসলামে রমজান মাসের সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজা রাখা আবশ্যক। তবে ভ্রমণকালে রোজা না রাখার বিশেষ অবকাশ রয়েছে। চাঁদ দেখার ভিত্তিতে আগামী ২৩ মার্চ থেকে রমজান মাস শুরু হতে পারে। এরপর ২০-২৩ এপ্রিলের মধ্যে কোনো একদিন পবিত্র ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মহাকাশ বিজ্ঞানী ড. আল-নিয়াদি বলেছেন, ‘ছয় মাসে আমরা পবিত্র রমজান মাস, ঈদসহ বেশ কিছু সুন্দর উৎসব উদযাপন করব। অবশ্য আমি ভ্রমণকারীর সংজ্ঞার মধ্যে পড়ি। আমার জন্য রোজা আবশ্যক হবে না। আমি চাইলে রোজা ভাঙতে পারব। তা ছাড়া স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও আহার করা যাবে।’ সেখানে সুযোগ পেলে রোজা রাখবেন এবং সহকর্মীদের সঙ্গে নিজের খাবার ভাগ করে নেবেন বলে জানান তিনি। তবে এ সময় নিজ পরিবারকে খুবই মনে পড়বে বলে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
মহাকাশে রোজা পালন ও ইবাদত করতে চাইলে মহাকাশ স্টেশনে ব্যবহৃত সময় নির্ধারক সর্বজনীন সমন্বিত সময় (ইউটিসি) বা গ্রিনিচ মান সময় (জিএমটি) পদ্ধতি কিংবা মক্কার সময় অনুসরণ করা যাবে।
এবারই প্রথম ড. আল-নিয়াদি মহাকাশে রমজানের রোজা পালন করবেন বিষয়টি এমন নয়; বরং আগেও অনেক মুসলিম মহাকাশে রমজানের রোজা ও নামাজ পালন করেছেন। ১৯৮৫ সালে সৌদি যুবরাজ সুলতান বিন সালমান মহাকাশে গিয়েছিলেন। প্রথম আরব ও মুসলিম নভোচারী হিসেবে তিনি মার্কিন মহাকাশ অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন। মহাকাশে যাত্রার দিন তিনি রোজা রেখেছিলেন। সেদিন ছিল রমজান মাসের শেষ দিন। তাঁর লেখা ‘সেভেন ডেইজ ইন স্পেস’ বইয়ে মহাকাশে থাকাকালে ইসলামী দায়িত্ব পালনের কথা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছেন। তাতে তিনি যাওয়ার দিন সাহরি খাওয়া, উড্ডয়নের আগে নামাজ পড়া এবং মহাকাশে থাকাকালে রোজা রাখা ও পবিত্র কোরআন পাঠের কথা উল্লেখ করেছেন। পরদিন সৌদি আরব ঈদের দিনের ঘোষণা দিলে সুলতানের আমেরিকান সহযাত্রী জন ফ্যাবিয়ান তাঁকে শুভেচ্ছা জানান। মহাকাশে সুলতান বিন সালমানের নামাজ আদায় ও কোরআন পাঠের ছবিও রয়েছে।
২০০৭ সালে রমজানের কয়েক দিন মহাকাশে কাটিয়েছেন মালয়েশিয়ার নভোচারী শেখ মুসজাফর শাকর। সেখানে মহাকাশচারীদের সঙ্গে ঈদ উৎসবও পালন করেছেন বলে জানা যায়। ২০১৯ সালে আমিরাতের প্রথম নভোচারী হাজ্জা আল মানসুরি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে আট দিন কাটান। সেখানে তাঁর নামাজ পড়ার ছবিও ধারণ করা হয়।
            
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: