যুক্তরাষ্ট্রের পর সিরিয়া থেকে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলো ইইউ

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২২ মে ২০২৫ ১৬:৪৭

ছবি : সংগৃহীত ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের পর সিরিয়ার ওপর দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন(ইইউ)। ইইউ’র পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কাজা কাল্লাস ঘোষণা করেন, এই সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির পুনর্গঠনে সহায়তা করা এবং সিরিয়ার জনগণের পাশে দাঁড়ানো।

কাল্লাস এক্সে লিখেছেন, আমরা চাই সিরিয়ার জনগণ একটি নতুন, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং শান্তিপূর্ণ সিরিয়া গড়ে তুলুক। ১৪ বছর ধরে আমরা তাদের পাশে ছিলাম এবং ভবিষ্যতেও থাকব। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।

এতে বলা হয়, ইইউ’র এই নীতিগত পরিবর্তন এমন এক সময়ে এলো, যখন সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ক্ষমতাচ্যুতি নিশ্চিত হয়েছে এবং দেশটি নতুন নেতৃত্বের অধীনে রয়েছে। সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শাইবানি ইইউ’কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এই সিদ্ধান্ত সিরিয়ার নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা জোরদার করবে। সিরিয়ার ওপর ২০১২ ও ২০১৩ সালে যেসব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল, তার বেশিরভাগই জ্বালানি, পরিবহন ও ব্যাংকিং খাতে ছিল।

ইইউ কূটনীতিকদের বরাতে এএফপি জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ফলে সিরিয়ার ব্যাংকগুলো আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থার সঙ্গে পুনরায় যুক্ত হতে পারবে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদের জব্দাদেশ প্রত্যাহার করা হবে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্ক করে বলেছে, যারা সম্প্রতি সংখ্যালঘু আলাওয়িতদের ওপর হামলা বা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর পেছনে দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

একইসঙ্গে, বাশার আল-আসাদ সরকারের আমলে জারি থাকা অস্ত্র বিক্রির নিষেধাজ্ঞা এবং দমনমূলক সরঞ্জাম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞাও বহাল থাকবে। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়াডেফুল লিখিত বিবৃতিতে বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সিরিয়ার সঙ্গে একটি নতুন সূচনা চায়, তবে আমরা আশা করি, দেশটি তার সব ধর্মীয় ও জাতিগত গোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি সহনশীল নীতি গ্রহণ করবে। তিনি আরও বলেন, একত্রিত সিরিয়া যেন তার ভবিষ্যৎ নিজেই নির্ধারণ করতে পারে- সেটিই আমাদের লক্ষ্য।

উল্লেখ্য, সিরিয়া ২০১১ সাল থেকে গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত। বাশার আল-আসাদের শাসনামলে মানবাধিকার লঙ্ঘন, রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার এবং বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার অভিযোগে দেশটির ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক সংকটে ভুগতে থাকা দেশটি এখন নতুন নেতৃত্বের অধীনে ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতার পথে এগোচ্ছে।

ইইউ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারিতেই কিছু খাতে নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে স্থগিত করা হয়েছিল এবং এবার তা সম্পূর্ণভাবে তুলে নেওয়া হলো। তবে তারা সতর্ক করেছেন, সিরিয়ার নতুন নেতৃত্ব যদি সংখ্যালঘু অধিকার রক্ষা এবং গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে, তাহলে এসব নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ করা হতে পারে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: