
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ইরানে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ইসরায়েলের সাম্প্রতিক আগ্রাসনে শহীদ হওয়া শীর্ষ সামরিক কমান্ডার ও বিজ্ঞানীদের সম্মানে একটি জাতীয় জানাজার আয়োজন করা হয়েছে। ইরানি সংবাদ সংস্থা তাসনিম জানিয়েছে, শনিবার (২৮ জুন) সকালে রাজধানী তেহরানে এই জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এতে অংশ নেবেন সাধারণ জনগণ, সরকারি কর্মকর্তা, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দসহ রাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা।
গত ১৩ জুন বিনা উসকানিতে ইসরায়েল ইরানের বিভিন্ন সামরিক, পারমাণবিক ও আবাসিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। এই আগ্রাসনে ৬০০-রও বেশি ইরানি নাগরিক শহীদ হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল মোহাম্মদ হোসেইন বাকেরি, আইআরজিসি প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সদর দপ্তরের কমান্ডার মেজর জেনারেল গোলাম আলি রাশিদ এবং এরোস্পেস ফোর্সের কমান্ডার মেজর জেনারেল আমির আলী হাজিজাদেহ। এ ছাড়াও শহীদ হয়েছেন ইরানের বেশ কয়েকজন শীর্ষ পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং সাধারণ নাগরিক।
এই নির্মম হামলার পর ইরান দ্রুত প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেয়। “অপারেশন ট্রু প্রমিজ-৩” নামে আইআরজিসি-এর এরোস্পেস ফোর্স ২২ দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরায়েলের অধিকৃত অঞ্চলজুড়ে, যার ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
এ হামলার চাপেই ইসরায়েল শেষপর্যন্ত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় বলে দাবি করেছে ইরানি সামরিক কর্তৃপক্ষ। শহীদ মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি ও তার দপ্তরের প্রধান জেনারেল মাসউদ শানেয়ির দাফন সম্পন্ন হবে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তাদের নিজ শহর গোলপায়েগানে।
শনিবার সকাল ৮টায় জাতীয় পর্যায়ের জানাজা শুরু হবে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে এবং শেষ হবে আজাদি স্কয়ারে। বিশাল শোক র্যালির মাধ্যমে শহীদদের প্রতি সম্মান জানানো হবে।
এটি শুধু একটি জানাজা নয়-বরং ইরানি জাতির পক্ষ থেকে একটি প্রতিবাদ, একটি ঐক্যের প্রকাশ। তেহরানসহ সারা দেশে এই ঘটনায় ব্যাপক আবেগ-উদ্রেক তৈরি হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, এই জানাজা অনুষ্ঠান ইরানের জনগণের সম্মিলিত শোক ও প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে উঠবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: