ছবি : ইন্টারনেট থেকে
                                    তুরস্কের দীর্ঘদিন বিদ্রোহী সংগঠন কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) এই জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহেই অস্ত্র সমর্পণ প্রক্রিয়া শুরু করবে বলে জানিয়েছে কুর্দি গণমাধ্যম রুদাও। এ অনুষ্ঠান ইরাকি কুর্দিস্তানের সুলাইমানিয়া শহরে হবে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। রুদাও’কে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
এই পদক্ষেপটি আসে মাত্র ছয় সপ্তাহ পরে, যখন পিকেকে ঘোষণা করে- তারা চার দশকের গেরিলা যুদ্ধের অবসান ঘটাবে। চার দশক ধরে চলমান এই সংঘাতে ৪০ হাজারের বেশি প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। তুরস্কের কুর্দি সংখ্যালঘুরা প্রায় সাড়ে আট কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ২০ শতাংশ। তারা আশাবাদী যে, এই নিরস্ত্রীকরণ সিদ্ধান্ত একটি রাজনৈতিক সমঝোতার পথ তৈরি করবে। তুর্কি সরকার ও কুর্দি রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিগন্ত খুলে যেতে পারে।
তুরস্কের প্রো-কুর্দি ডিইএম (ডিইএম) পার্টি জানিয়েছে, এই প্রক্রিয়া জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে শুরু হতে পারে। ডিইএম পার্লামেন্টারি গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট সেজাই টেমেলি সোমবার সংসদে বলেন, এটি সম্ভবত আগামী সপ্তাহেই ঘটবে। আমরা জুলাইয়ের ৮ বা ৯ তারিখে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যিপ এরদোগানের সাথে দেখা করব। এরপর অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বৈঠক করে ইমরালি দ্বীপে যাব।
উল্লেখ্য, ইমরালি দ্বীপে এই পিকেকের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহ ওজালান ১৯৯৯ সাল থেকে বন্দি। সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, সন্ত্রাসমুক্ত তুরস্ক গঠনের লক্ষ্যে যে কাজ হচ্ছে, তার অগ্রগতি দেখে আমরা সন্তুষ্ট। আমাদের অঞ্চলে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো প্রমাণ করে, এটি একটি সঠিক এবং কৌশলগত সিদ্ধান্ত। তিনি উল্লেখ করেন, গাজা যুদ্ধের পর মধ্যপ্রাচ্যে যে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, তাতে তুরস্কের এই পদক্ষেপ আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ।
রুদাও প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০ থেকে ৩০ জন পিকেকে সদস্য জুলাই ৩ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে একটি আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে অস্ত্র জমা দেবেন। অনুষ্ঠানের পর তারা নিরস্ত্র অবস্থায় নিজেদের বেশে ফিরে যাবেন, কোনো শহরে অবস্থান করবেন না। একটি সূত্র জানিয়েছে, এই নিরস্ত্রীকরণ একটি বিশ্বাস গড়ার পদক্ষেপ এবং তুরস্কের সঙ্গে সমঝোতার আগ্রহের প্রতীক। এছাড়া, আশা করা হচ্ছে পিকেকে প্রতিষ্ঠাতা ওজালান শিগগিরই একটি বার্তা দেবেন, যা দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রক্রিয়ার সূচনা হবে।
নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া কীভাবে কাজ করবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি তুরস্কের পক্ষ থেকে। তবে তুরস্ক সরকার বলেছে, তারা এই প্রক্রিয়াকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে, যাতে পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা যায়।
            
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: