বিদেশি ঋণ পরিশোধে বাংলাদেশে ঊর্ধ্বগতি, ঋণ প্রবাহে ধীরগতি

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৩০ মে ২০২৫ ১৭:৩০

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই থেকে এপ্রিল) বাংলাদেশে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, অন্যদিকে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক উন্নয়ন অংশীদারদের কাছ থেকে নতুন ঋণ প্রাপ্তির হার কমে গেছে। শুক্রবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) প্রকাশিত প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এ সময়ে দেশটি মোট ৩.৫ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশি মুদ্রায় (টাকায়) ঋণ পরিশোধের ব্যয় প্রায় ৩৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২,২৮১ কোটি টাকা।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই)-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ আশিকুর রহমান জানান, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ বেড়েছে মূলত দেশের ঋণ পরিসর বৃদ্ধির পাশাপাশি বৈশ্বিক সুদের হার বৃদ্ধি ও টাকার অবমূল্যায়নের কারণে।

তবে তিনি বলেন, “এই বৃদ্ধির পরও বাংলাদেশে ঋণ খেলাপির ঝুঁকি এখনও ন্যূনতম।"

তিনি আরও উল্লেখ করেন, চলতি অর্থবছরে রপ্তানি ও প্রবাসী আয় থেকে মোট বৈদেশিক মুদ্রা প্রবাহ ৭৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা বার্ষিক ঋণ পরিশোধ ৫–৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছালেও তা মেটানোর জন্য যথেষ্ট নিরাপত্তা বলয় প্রদান করবে।

তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, "বিনিময় হার অব্যাহতভাবে কমতে থাকলে ঋণ পরিশোধে টাকার পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে, যা জাতীয় বাজেটের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করতে পারে।"

তাই, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি এবং আর্থিক ভিত্তি সম্প্রসারণে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “বিদেশি ঋণ ব্যবস্থাপনা ও দেশের উন্নয়ন অগ্রাধিকার রক্ষায় পর্যাপ্ত আর্থিক সক্ষমতা ধরে রাখার জন্য ঘরোয়া সম্পদ সংগ্রহ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।"

ইআরডি প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে বৈদেশিক ঋণ ছাড়ের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় ১৮ শতাংশ কমে ৫.১৬ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।

মূলধন ও সুদ পরিশোধের পর নিট বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে মাত্র ১.৬৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের ৩.৪৭ বিলিয়নের তুলনায় অর্ধেকেরও কম।

এ ছাড়া, এই সময়ে নতুন বৈদেশিক ঋণের অঙ্গীকারও ৪৪ শতাংশ কমে ৪.২৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে বলে জানায় ইআরডি।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: