
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের (এসইএআরও) আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে হেলথ পলিসি ওয়াচ। শুক্রবার হেলথ পলিসি ওয়াচ এর ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে দুটি মামলা দায়ের করার চার মাস পর এ পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস একটি সংক্ষিপ্ত অভ্যন্তরীণ ইমেইলে কর্মীদের জানান, সায়মা ওয়াজেদ শুক্রবার থেকে ছুটিতে থাকবেন। সংস্থাটির সহকারী মহাপরিচালক ডা. ক্যাথারিনা বোহেম তাঁর স্থলাভিষিক্ত হবেন। বোহেম মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে এসইএআরও দপ্তরে যোগ দেবেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলন শুরু হলে তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ গত আগস্টে দেশত্যাগ করেন। তার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে নিয়োগের প্রক্রিয়ায় প্রভাব খাটানো হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে দুদক আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করে। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল আঞ্চলিক পরিচালক নির্বাচনের প্রচারণার সময় নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে ভুয়া তথ্য উপস্থাপন করেন। এই কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের দণ্ডবিধির ৪৬৮ ধারা (প্রতারণার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি) ও ৪৭১ ধারা (জাল দলিল ব্যবহার) লঙ্ঘন করে।
দুদকের উপপরিচালক আখতারুল ইসলাম জানান, তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মানসূচক পদে নিযুক্ত থাকার যে দাবি করেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা অস্বীকার করেছে। এই মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে তিনি ডব্লিউএইচও’র পদটি লাভ করেন বলে অভিযোগ।
এছাড়া, সায়মা ওয়াজেদ তার ক্ষমতা ও প্রভাব ব্যবহার করে সূচনা ফাউন্ডেশনের জন্য বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ২ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহের অভিযোগেও অভিযুক্ত। তবে এই অর্থ কীভাবে ব্যয় হয়েছে, সে বিষয়ে দুদক বিস্তারিত তথ্য দেয়নি।
এই অভিযোগসমূহের মধ্যে রয়েছে—বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪২০ ধারা (প্রতারণা ও অসৎ উদ্দেশ্যে সম্পত্তি গ্রহণ), ক্ষমতার অপব্যবহার এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এর ৫(২) ধারা।
মামলার পর থেকে সায়মা ওয়াজেদ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে স্বাভাবিকভাবে ভ্রমণ করতে পারছেন না। বাংলাদেশে ফিরলে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারের আশঙ্কা রয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: