
২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের মে পর্যন্ত ছয় মাসের মধ্যে বাংলাদেশ দেশি-বিদেশি কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে মোট ১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে।
প্রস্তাবগুলো বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা) এবং বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষসহ গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাগুলোর কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, এই প্রস্তাবগুলোর প্রায় ২০ শতাংশ ইতোমধ্যেই চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে - যেমন চুক্তি সই, জমি ইজারা নিশ্চিতকরণ এবং বরাদ্দপত্র প্রদান।
বিডার ব্যবসায় উন্নয়ন প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি এসব তথ্য নিশ্চিত করে উল্লেখ করেছেন, বেপজার প্রাপ্ত প্রস্তাবগুলোর পরিমাণ প্রায় ৩২০ মিলিয়ন ডলার, বিডা প্রায় ৬৩০ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে এবং বাকি প্রায় ৭০ মিলিয়ন ডলার অন্যান্য সংস্থাগুলোর মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
রোচি স্পষ্ট করে বলেন, প্রতিটি প্রস্তাব একটি সম্পূর্ণ বিনিয়োগ পর্যালোচনা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবে এবং কেবলমাত্র একটি অংশই প্রকৃত বিনিয়োগে রূপান্তরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সাধারণত ১ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে এটি হবে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, প্রস্তাব এবং বাস্তবায়নের মধ্যে এই ব্যবধান বিশ্বব্যাপী একটি সাধারণ প্রবণতা, বিশেষ করে বৃহৎ আকারের প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রে।
বেশিরভাগ প্রস্তাব প্রায় ৫০ শতাংশ বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে এসেছে, বাকিগুলো দেশীয় কোম্পানি থেকে। বর্তমানে প্রায় ২০ শতাংশ প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে এবং প্রায় ৬০ শতাংশ প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ের অধীনে রয়েছে।
বেপজা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ডিসেম্বর থেকে মে মাসের মধ্যে ১৭টি কোম্পানির সঙ্গে জমি ইজারা চুক্তি সই হয়েছে, যারা সম্মিলিতভাবে প্রায় ১৮৪.৪৬ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ইপিএল (এক্সপোর্ট লিংক) অ্যাকসেসরিজ লিমিটেড; বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ফোম, কার্টন এবং আনুষাঙ্গিক তৈরিতে ৮ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব করছে। হামজা ফাইবারস লিমিটেড তৈরি পোশাক উৎপাদনের জন্য কর্ণফুলী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে ১৬ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব করেছে। এছাড়া বাংলাদেশের কেকেওয়াই ক্যানভাস লিমিটেড পোশাক এবং আনুষাঙ্গিক তৈরির জন্য আদমজী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে ১৭.৫১ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে।
বিনিয়োগকারীদের ক্রমবর্ধমান আগ্রহ এবং স্বচ্ছতার প্রয়োজনীয়তার কথা বিবেচনা করে বেজা একটি ইউনিফাইড ইনভেস্টমেন্ট পোর্টাল তৈরি করছে, যাতে বিনিয়োগের অবস্থা, জোন উন্নয়ন, জমির প্রাপ্যতা এবং অনুমোদনের সময়সীমা সম্পর্কিত তথ্য একত্রিত করা যায়।
বেজার নির্বাহী সদস্য মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এই প্ল্যাটফর্মের লক্ষ্য হলো বিভিন্ন সংস্থায় তথ্য শেয়ার প্রমিতকরণ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণকে সুগম করা।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করা প্রাথমিক লক্ষ্য। তিনি স্বীকার করেন, বাজার স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ ব্যালেন্সের মতো বাহ্যিক কারণগুলোও প্রকৃত বিনিয়োগ প্রবাহকে প্রভাবিত করছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: